Lonar Lake

আচমকা কোনার হ্রদের জল পাল্টে গোলাপি! ‘রংবদল’ ঘিরে তীব্র কৌতূহল

ভূ-বিজ্ঞানীদের মতে, প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে উল্কাপাতের পর তার বিশাল একটি খণ্ড আছড়ে পড়ে তৈরি হয়েছিল এই লোনার হ্রদ। এই হ্রদের পরিধি প্রায় ১.২ কিলোমিটার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২০ ১৮:০৩
Share:

কেন লেকের জলের রং পাল্টে গোলাপি হয়ে গেল, তার কারণ খুঁজছেন বিজ্ঞানী-গবেষকরা। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

আচমকাই পাল্টে গেল লেকের জলের রং। নীল জল পাল্টে হয়ে গেল গোলাপি!

Advertisement

মহারাষ্ট্রের বুলধনা জেলায় লোনার হ্রদের জলের এই রংবদল ঘিরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা, উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ও গবেষকদের মধ্যে। কেন রং পাল্টে গেল, তা নিয়ে এখনও দ্বিধায় সকলে। কেউ বলছেন, জলের নীচে থাকা জলজ উদ্ভিদের রং পরিবর্তনের ফলে এমনটা হতে পারে। অনেকে আবার লকডাউনের জেরে দূষণ কমে যাওয়াও কারণ হিসেবে তুলে আনছেন। যদিও নির্দিষ্ট কোনও তত্ত্ব এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

ভূ-বিজ্ঞানীদের মতে, প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে উল্কাপাতের পর তার বিশাল একটি খণ্ড আছড়ে পড়ে তৈরি হয়েছিল এই লোনার হ্রদ। এই হ্রদের পরিধি প্রায় ১.২ কিলোমিটার। মুম্বই থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে বুলধনার এই লবণাক্ত জলের হ্রদ পরিচিত পর্যটন কেন্দ্র। প্রায় সারা বছর পর্যটকদের ভিড়ে সরগরম থাকে। তবে এখন লকডাউনের জেরে পর্যটকদের ভিড় নেই। কিন্তু তার মধ্যেই স্থানীয় বাসিন্দারা কিছু দিন আগে দেখতে পান, লেকের নীল জল গোলাপি রঙে পাল্টে গিয়েছে। তাতেই বিস্মিত হয়ে যান এলাকাবাসী। লকডাউনের মধ্যেও বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন হ্রদের ধারে। ছবি-ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই কৌতূহল বাড়ে উদ্ভিদ-বিজ্ঞানীদের মধ্যে।

Advertisement

প্রশ্ন ওঠে, কেন হঠাৎ এই রংবদল? বিশেষজ্ঞেরা অবশ্য বলছেন, এটাই প্রথম নয়, এর আগেও এই লোনার হ্রদের জলের রঙে সামান্য পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু এ বারের মতো এমন গাঢ় গোলাপি রং কখনও হয়নি। কোনার হ্রদ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন কমিটির সদস্য গজানন খারাট জানিয়েছেন, ‘ন্যাশনাল জিয়ো-হেরিটেজ’ মনুমেন্ট হিসেবে ঘোষিত এই লোনার হ্রদের জলের ক্ষারীয় মাত্রা ১০.৫। তিনি বলেন, ‘‘হ্রদের জলের তলায় থাকা উদ্ভিদরাজিতে পরিবর্তন হতে পারে। জলের লবণাক্ততা বা ক্ষারের মাত্রা পরিবর্তনের জেরেও রংবদল হতে পারে।’’

আরও পড়ুন: দেড় সপ্তাহের বিরতির পর ফের পঙ্গপালের হানা, এ বার প্রয়াগরাজে

খারাট জানিয়েছেন, লোনার লেকের জলের উপরিতল থেকে এক মিটার নীচে অক্সিজেন নেই। ইরানে এই রকম একটি হ্রদ রয়েছে, যাতে লবণাক্ততা বেড়ে গেলেই জলের রং লালচে হয়ে যায়। গজানন খারাট বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বার জল কম রয়েছে। বেশি বৃষ্টিপাত হয়নি বলে বিশুদ্ধ জলও পড়েনি। ফলে লবণাক্ততা বেড়ে যেতে পারে।’’

আরও পড়ুন: আমার বিশ্বাস, কলকাতা আবার দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারে: প্রধানমন্ত্রী

জলের রংবদলকে প্রাকৃতিক ঘটনা বলেই মনে করছেন অওরঙ্গাবাদের ডক্টর বাবাসাহেব অম্বেডকর মারাঠাওয়াড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রধান মদন সূর্যবংশীও। তিনি বলেন, জলজ উদ্ভিদের রং সাধারণত সবুজ হয়। সেই কারণে জলের রংও সবুজ রঙেরই দেখায়। কিন্তু (লোনার লেকের) এই পরিবর্তন বাস্তুতন্ত্রের পরিবর্তনের ফলে হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।’’ তবে লকডাউনের জেরে পরিবেশের পরিবর্তনের বিষয়টিও তিনি উড়িয়ে দেননি। তিনি বলেন, লকডাউনের জেরে হ্রদের জলে দীর্ঘদিন বড় কোনও নড়াচড়া হয়নি। তা ছাড়া দূষণ কমার মতো পরিবেশেও বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। সেই কারণেই এমন ঘটনা ঘটতে পারে। পরীক্ষা-নিরিক্ষার পর তাঁরা এ বিষয়ে আরও নিশ্চিত করে বলতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement