Mann Ki Baat

প্রশ্নের মুখে মন কি বাত-এর সমীক্ষাকর্তাই

আইআইএম-রোহতকের অধিকর্তার দাবি, তাঁদের সমীক্ষায় দেশের মানুষ জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী মানুষের দুঃখ বোঝেন, তা ভাগ করে নেন। নাগরিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাঁদের দিশা দেখান।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৩ ০৮:০৭
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আইআইএম-রোহতকের অধিকর্তা ধীরজ শর্মা। ফাইল চিত্র।

‘মন কি বাত’-এর শততম পর্বের আগে আইআইএম-রোহতকের অধিকর্তা ধীরজ শর্মা দাবি করেছিলেন, তাঁদের সমীক্ষা বলছে, দেশের ১০০ কোটি লোক অন্তত একবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত’ শুনেছেন।

Advertisement

মোদী সরকারের শিক্ষা মন্ত্রক বলছে, ধীরজ শর্মার আইআইএম-রোহতকের অধিকর্তার পদে থাকার যোগ্যতাই নেই।

আইআইএম-রোহতকের অধিকর্তার দাবি, তাঁদের সমীক্ষায় দেশের মানুষ জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী মানুষের দুঃখ বোঝেন, তা ভাগ করে নেন। নাগরিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাঁদের দিশা দেখান।

Advertisement

মোদী সরকারের শিক্ষা মন্ত্রকের দাবি, আইএমএম-অধিকর্তার পদে থাকার প্রয়োজনীয় ডিগ্রি না থাকলেও তাঁকে নিয়োগ করা হয়েছে। কী ভাবে তা হল, তার তদন্ত চলছে।

রবিবার নরেন্দ্র মোদীর ‘মন কি বাত’-এত শতপর্ব উদ্‌যাপনের মধ্যে প্রশ্ন উঠল, ‘মন কি বাত’ নিয়ে আইআইএম-রোহতকের সমীক্ষা কি মন গড়া ছিল?

কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের অভিযোগ, ‘‘আইআইএম-রোহতক ‘মন কি বাত’-এর প্রভাব নিয়ে ভুয়ো সমীক্ষা চালিয়েছে। সংস্থার ডিরেক্টরের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রকই প্রশ্ন তুলেছে।’’

‘মন কি বাত’-এর শতপর্ব পর্বের আগে, গত সপ্তাহে হরিয়ানার রোহতকের আইআইএম-এর অধিকর্তা ধীরজ শর্মা দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন। ‘মন কি বাত’-এর প্রভাব নিয়ে তাঁর সংস্থার সমীক্ষা তুলে ধরে আইআইএম-রোহতকের অধিকর্তা দাবি করেন, ৯৬ শতাংশ মানুষ ‘মন কি বাত’-এর কথা জানেন। ২৩ কোটি মানুষ নিয়মিত শোনেন। ৪১ কোটি মানুষ মাঝেমধ্যে শোনেন। দেশের মানুষ মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীর জ্ঞান যথেষ্ট। তিনি শ্রোতাদের সঙ্গে মানসিক যোগাযোগ তৈরি করতে পারেন।তাঁর ক্ষমতা রয়েছে। তিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

তাৎপর্যপূর্ণ হল, গত মাসেই মোদী সরকারের শিক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, ধীরজ শর্মার আইআইএম-ডিরেক্টর পদে থাকার যোগ্যতা নেই। কারণ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট-এর মতো প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর হতে গেলে অন্যান্য যোগ্যতার সঙ্গে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক হওয়া প্রয়োজন। ধীরজ দ্বিতীয় শ্রেণিতে স্নাতক হয়েছিলেন। অথচ ধীরজ ২০১৭ থেকে ওই পদে রয়েছেন। প্রথম দফায় পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে ২০২২-এ তাঁকে দ্বিতীয় দফার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে। পঞ্জাব-হরিয়ানা হাই কোর্টে ধীরজের নিয়োগ চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়েছিল। ধীরজ দীর্ঘদিন ধরে তাঁর স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি দেখাতে চাইছিলেন না। কেন্দ্রীয় সরকারই এত দিন এই নিয়োগের পক্ষে সওয়াল করছিল। কিন্তু এখন শিক্ষা মন্ত্রক আদালতে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে, কী ভাবে এই নিয়োগ হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হবে। ধীরজ শর্মার বিরুদ্ধে এর আগে প্রতিষ্ঠানের এক অধ্যাপিকা যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন। পুলিশ প্রথমে তদন্ত বন্ধ করতে চাইলেও আদালত তাতে বাধা দেয়। সেই তদন্তও চলছে।

এই প্রেক্ষিতে আইআইএম-রোহতকের সমীক্ষার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সব মহলেই প্রশ্ন উঠেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রাক্তন সচিব অনিল স্বরূপের মন্তব্য, ‘‘মানুষের কাছে পৌঁছতে ‘মন কি বাত’-এর পরিকল্পনা খুব ভাল। ঠিক যেমন ১৯৩০-এ ফ্র্যাঙ্কলিন রুজভেল্ট আমেরিকায় করেছিলেন। আইআইএম-এর সমীক্ষা বলছে, ‘মন কি বাত’ বিপুল মানুষের কাছে পৌঁছেছে। কিন্তু সেটা মন গড়া কথা না কি বাস্তব, তা যাচাই করা উচিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement