প্রতীকী ছবি
আগামী বুধবার কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের বর্ষপূর্তির দিনেই অযোধ্যায় রামমন্দিরের শিলান্যাস। আর তার পরেই স্বাধীনতা দিবস। এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পাক মদতে পুষ্ট জঙ্গিরা দেশে নাশকতা চালাতে পারে বলে সতর্কবার্তা জারি করল ভারতের বৈদেশিক গুপ্তচর সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং বা ‘র’। ইতিমধ্যেই তাদের পাঠানো তিনটি সতর্কবার্তা রাজ্য পুলিশের সদর দফতরে এসেছে। বার্তায় বলা হয়েছে, জঙ্গিদের মূল লক্ষ্য দিল্লি হলেও দেশের বর্ষীয়ান রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী এবং কয়েক জন ভিভিআইপি-কেও নিশানা করা হতে পারে।
প্রতি বছরই স্বাধীনতা দিবসের সময় গোয়েন্দাবাহিনীর তরফে রাজ্যে রাজ্যে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু এ বছর দেশের গোয়েন্দাবাহিনীগুলির মধ্যে সমন্বয়কারী প্ল্যাটফর্ম ‘মাল্টি এজেন্সি সেন্টার’ (ম্যাক)-এ সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে ‘র’। তাতে ভারত-নেপাল সীমান্ত দিয়ে কয়েক জন পাক-প্রশিক্ষিত জঙ্গি ঢোকার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। এর পরই রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগের তরফে সীমান্তবর্তী এলাকায় সতকর্তা জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে নেপাল সীমান্ত নিয়ে রাজ্য পুলিশের চিন্তা সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি, সতর্ক করা হয়েছে সব জেলার পুলিশ সুপারকেও।
রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘সাধারণত স্বাধীনতা দিবসের কাছাকাছি সময়ে সতর্কতা জারি করা হয়। হোটেল, স্টেশন, এয়ারপোর্ট এবং সীমান্ত এলাকায় বিশেষ নজরদারি চলে। এ বার জুলাইয়ের শেষ থেকেই তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।’’
রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগের বার্তায় বলা হয়েছে, গত ২৭ জুলাই ‘র’ জানিয়েছে, আফগানিস্থানে প্রশিক্ষিত লস্কর-ই-তইবা এবং জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্যদের এ দেশে পাঠতে সক্রিয় হয়েছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। তিন থেকে পাঁচ জনের দল কাশ্মীর সীমান্ত বা অন্য কোনও কোনও পথে এ দেশে ঢুকতে সচেষ্ট। তাদের লক্ষ্য, ৫ অগস্ট থেকে স্বাধীনতা দিবসের মধ্যে হামলা চালানো। দিল্লিতে ভিভিআইপি হত্যার ছকও তাদের রয়েছে। এর আগে গত ১৮ জুন আরেকটি বার্তায় ‘র’ জানিয়েছিল, ২০-২৫ জন জঙ্গির একটি দল ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছে। তালিবান এবং জইশের এই দলটিকে পাক সেনার ‘স্পেশ্যাল সার্ভিসেস গ্রুপ’ (এসএসজি) প্রশিক্ষণ দিয়েছে। মূল দলটি কাশ্মীরে ঢুকে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করলেও ৩-৫ জনের একটি ছোট দল নেপাল সীমান্ত দিয়ে এ দেশে ঢুকতে পারে। ‘র’-এর তরফে আরও একটি সতর্কবার্তা এসেছিল ২৬ মে। তাতে বলা হয়েছিল, আফগানিস্থানের জালালাবাদে এসএসজি-র প্রশিক্ষণ নিয়ে এক দল জঙ্গি ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছে। উত্তর কাশ্মীরের সীমান্ত দিয়ে তারা দেশে ঢুকতে পারে। মূলত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বা উপদ্রুত এলাকায় পেট্রলিংয়ে যাওয়া নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানরা তাদের লক্ষ্য। অস্ত্রাগার লুটের ছকও তাদের পরিকল্পনায় রয়েছে।