National News

নারী দিবসের ভোটে ঘরে-বাইরে লড়াই দুই নেত্রীর

দুই নারী! কিন্তু হাতে তাঁদের তরবারি নেই। বরং তরবারির বিরুদ্ধেই তাঁদের রাজনৈতিক সংগ্রাম। সম্বল বলতে মুখের হুইসেল (যা তাঁদের নির্বাচনী প্রতীকও), জনতার কাছে ভিক্ষে করা আর অনলাইনে জোগাড় করা কয়েক লক্ষ টাকা এবং কয়েকটি সাইকেল- যা ভোট প্রচারে ইরম শর্মিলা চানু ও নাজিমা বিবিদের বাহন ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৭ ১৭:৫২
Share:

দুই নারী! কিন্তু হাতে তাঁদের তরবারি নেই। বরং তরবারির বিরুদ্ধেই তাঁদের রাজনৈতিক সংগ্রাম। সম্বল বলতে মুখের হুইসেল (যা তাঁদের নির্বাচনী প্রতীকও), জনতার কাছে ভিক্ষে করা আর অনলাইনে জোগাড় করা কয়েক লক্ষ টাকা এবং কয়েকটি সাইকেল- যা ভোট প্রচারে ইরম শর্মিলা চানু ও নাজিমা বিবিদের বাহন ছিল। কাকতালীয় হয়ত। ১৬ বছরের অনশন ভেঙে রাজনীতির লড়াইতে হাতেখড়ি হওয়া শর্মিলা এবং রাজ্যের প্রথম সংখ্যালঘু (পাঙ্গাল) মহিলা প্রার্থী নাজিমাবিবির প্রথম ভোটযুদ্ধের তারিখটা পড়ল নারী দিবসেই। আর ভোটার সংখ্যার নিরিখেও মেয়েরাই ছিলেন এগিয়ে।

Advertisement

মণিপুরে আজ ছিল শেষ দফার ভোট। ভোটগ্রহণের হার প্রথম দফার মতোই নজিরবিহীন, প্রায় ৮৬ শতাংশ। কে বলবে, গত বছর ১ নভেম্বর থেকে এখানে থমকে ছিল জীবনযাত্রা! নাগা অধ্যূষিত এলাকার মানুষ যে হারে ভোট দিয়েছেন, তাতে খুশি এনডিএ, আশঙ্কায় কংগ্রেস।

আরও পড়ুন, আইএস নাকি আইএস নয়? রইল ধোঁয়াশা

Advertisement

নাগা এলাকা ভাগ করে নতুন জেলা গঠনের পর থেকেই কংগ্রেসের পরিস্থিতি সেখানে শোচনীয়। চলছে চারমাস ব্যাপী বনধ। এ দিকে, নাগাদের অধিকারের জন্য লড়া ও বৃহত্তর নাগালিমের স্বপ্ন দেখিয়েছে নাগাল্যান্ডের শাসকজোটের প্রধান দল ও বিজেপি শরিক এনপিএফ। পার্বত্য মণিপুরে এনপিএফ যত বেশি আসন পাবে, ততই বিজেপির লাভ। পাশাপাশি দেড় দশকের শাসনের জেরে দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানবিরোধী মনোভাব কংগ্রেসকে চাপে রেখেছে। বিজেপি ভোটপ্রচারে প্রধানমন্ত্রী-সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের মেলা বসিয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেসের হয়ে মাত্র একটি সভা করেন রাহুল গাঁধী। তবে, বিজেপির বড় দুর্বলতা, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার মতো কোনও 'মুখ' তুলে ধরতে না পারা। এ দিন ভোট দিয়ে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ইবোবি অবশ্য জানান, কংগ্রেসের ক্ষমতায় ফেরা নিয়ে কোনও শঙ্কা নেই।

কিন্তু তিনি নিজে জিতবেন তো? তাঁর বিরুদ্ধেই সম্মুখসমরে নেমেছেন শর্মিলা। প্রশ্নের জবাবে তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী সশব্দে তাচ্ছিলের হাসি হাসতে-হাসতে চলে যান।

অনশন ভাঙায় মহিলা সংগঠনগুলির ধিক্কারকে সঙ্গী করে এগোতে হয়েছিল শর্মিলাকে। পাশে ছিল না পরিবারও। কিন্তু খোলাখুলি সমর্থন পেয়েছিলেন রাজ্যে অবদমিত রূপান্তরকামীদের। অন্য দিকে, ইমামদের নিষেধ উড়িয়ে ভোটে নামায় প্রথম পাঙ্গাল মহিলা প্রার্থী নাজিমাবিবিকে কবরের মাটি দেওয়া হবে না বলে ফতোয়া জারি হয়েছে। দুই নারীই জানেন, দুঁদে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে তাঁদের জয়ের আশা কম। কিন্তু বিভিন্ন বুথে কখনও হুইসেল বাজিয়ে, কখনও হাসিমুখের আলাপচারিতায় শর্মিলারা বুঝিয়ে দিলেন, এক পরাজয়ে কমবে না তাঁদের পরাক্রম।

আরও পড়ুন, আর জলের বোতলে অতিরিক্ত চার্জ নয় বিমানবন্দর, মাল্টিপ্লেক্সে

আজকের ভোট ছিল ১১টি জেলার ১১৫১টি বুথে। সতর্কতা ছিল তুঙ্গে। দুর্গম ২০টি বুথে চপারে নামানো হয় ভোটকর্মী ও ইভিএম। চার মহিলা-সহ ৯৮ জন প্রার্থী এ দিন লড়লেন। ভোট অবশ্য মেটেনি। প্রথম দফার ৩৪টি বুথে আগামীকাল ফের ভোটগ্রহণ। এ দিনও চান্ডেলের বুথে ইভিএম ভাঙচুর হয়েছে। ভোট মেটার পরে এ দিন ইম্ফল শহরের কস্তুরি সেতুর কাছে বিস্ফোরণে তিন মহিলা-সহ ছ'জন সামান্য জখম হন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement