ভি এস অচ্যুতানন্দন।
নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়তে জাতীয় স্তরে ধর্মনিরপেক্ষ জোটই সঠিক কৌশল বলে সওয়াল করলেন ভি এস অচ্যুতানন্দন। কেরলের এই প্রবীণ নেতা সিপিএমের রাজনৈতিক লাইন নিয়ে বিতর্কে আজ সীতারাম ইয়েচুরিরই পাশে দাঁড়িয়েছেন। কেন্দ্রীয় কমিটিতে তাঁর যুক্তি, রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুযায়ী দলকে রাজনৈতিক কৌশলও বদলাতে হবে।
ঠিক এই কথাটাই বলছেন ইয়েচুরি। তিনি ২০১৯-এর আগে বিজেপি-র বিরুদ্ধে কংগ্রেস ও অন্য দলগুলির জোট হলে তাতে যোগ দেওয়ার পক্ষপাতী। কিন্তু প্রকাশ কারাট, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নেরা তার বিরুদ্ধে। তাঁরা অন্য বিরোধী দলের সঙ্গে বোঝাপড়ায় রাজি হলেও নির্বাচনী জোটের পুরোপুরি বিরুদ্ধে!
আরও পড়ুন:সঙ্ঘকে ঠেকাতে বিশেষ শিবিরে বিজয়ন-রেড্ডিরা
কেন্দ্রীয় কমিটিতে অবশ্য শুধু ভি এস নন, কেরলের অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাকও যুক্তি দিয়েছেন, জাতীয় স্তরে বিরোধী জোটে সিপিএমের থাকা দরকার। কংগ্রেস রয়েছে বলে তা থেকে সরে আসার অর্থ হয় না। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতারাও মনে করছেন, কংগ্রেস বা অন্য দলগুলির জোটে সিপিএমের যোগ দেওয়া জরুরি। কেরলের নেতা হয়েও আইজ্যাক যুক্তি দিয়েছেন, রণকৌশল তৈরির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের দলের পরিস্থিতিটা মনে রাখা জরুরি। পাশাপাশিই ভি এসের মত, কেরল-ত্রিপুরার মতো যেখানে সিপিএম ক্ষমতায় রয়েছে, সেই রাজ্যগুলিতে বিজেপি-আরএসএস সম্পর্কে বেশি করে সতর্ক থাকতে হবে।
কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের শেষ দিন সোমবার। রাজনৈতিক লাইন ঠিক করার পাশাপাশি, ঋতব্রত-কাণ্ডের পরে দলের অনুশাসন নিয়ে আরও কড়া হতে চাইছেন সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব। দলীয় নেতাদের মত, এখন থেকে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খোলা, দলীয় শৃঙ্খলা মেনে না চলা বা অ-কমিউনিস্ট সুলভ কাজকর্মের ঘটনায় কড়া অবস্থান নেওয়া প্রয়োজন। এই অবস্থান থেকেই বাংলার নেতা গৌতম দেবের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে চাইছেন পলিটব্যুরোর সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতারা। ইয়েচুরিকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় প্রার্থী না করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন তিনি। নিজে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হলেও সেই কমিটির সিদ্ধান্তেরই বিরুদ্ধে জুলাই মাসে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘এদের মাথা থেকে ক্যারা বার না করলে হবে না’। ইয়েচুরিকে ঈর্ষা করেই কারাটেরা তাঁর রাজ্যসভায় যাওয়া আটকে দিয়েছিলেন কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছিলেন তিনি। দলের তরফে আগেই গৌতমবাবুর কাছে জবাবদিহি চাওয়া হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ও তাঁর জবাব, দু’টিই কেন্দ্রীয় কমিটির সামনে পেশ হবে।