অপসারিত জ্ঞানবাপী মামলার অ্যাডভোকেট কমিশনার। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ উঠেছিল কয়েক সপ্তাহ আগেই। জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফির দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক দলের অ্যাডভোকেট কমিশনার অজয়কুমার মিশ্রের ‘ডানা ছেঁটে’ সেই সময় আরও দু’জন সহকারী অ্যাডভোকেট কমিশনার নিয়োগ করেছিল বারাণসীর আদালত। মঙ্গলবার হঠাৎই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল অজয়কুমারকে।
বারাণসী আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকর মঙ্গলবার অজয়কুমারকে দায়িত্ব থেকে সরানোর কথা ঘোষণা করে দুই সহকারী পর্যবেক্ষক, বিশাল সিংহ এবং অজয়প্রতাপ সিংহকে দু’দিনের মধ্যে সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফি সংক্রান্ত চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন। পর্যবেক্ষক দলে রয়েছেন, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর বিশেষজ্ঞ এবং যুযুধান দু’পক্ষের প্রতিনিধিরাও।
শনিবার থেকে মসজিদের অন্দরের দু’টি গম্বুজ, ভূগর্ভস্থ অংশ, পুকুর-সহ সব জায়গার পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফি করে সোমবার বারাণসীর আদালতে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করা হয় সমীক্ষক দলের তরফে। তার পরেই জ্ঞানবাপীর ওজুখানা ও তহ্খানা ‘পুরোপুরি সিল করে’ সিআরপিএফ মোতায়েনের নির্দেশ দেয় আদালত। বারাণসীর জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনারের পাশাপাশি সিআরপিএফের এক জন কমান্ডান্ট (সুপার) স্তরের আধিকারিককে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন নগর-দায়রা আদালতের বিচারক দিবাকর।
যদিও মঙ্গলবার সেই রায় কার্যত খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, কাশীর জ্ঞানবাপী মসজিদের ওজুখানার জলাধারে তথাকথিত শিবলিঙ্গের (মতান্তরে ফোয়ারা) নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নির্দেশ দিতে পারে বারাণসীর আদালত। কিন্তু কোনও ভাবেই মসজিদে নমাজ বন্ধ করা যাবে না।
অজয়কুমারের অপসারণের ‘কারণ’ সম্পর্কে সরাসরি কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি বারাণসী আদালত। তবে সোমবার আবেদনকারী হিন্দুত্ববাদী পক্ষের আইনজীবী হরিশঙ্কর জৈন ‘সমীক্ষক দলের প্রধানের’ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ওজুখানার জলাধারে শিবলিঙ্গের অস্তিত্বের দাবি করেছিলেন। চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা পড়ার আগেই এমন বিতর্কিত মন্তব্য অজয়কুমারের বিদায়ের পথ প্রশস্ত করল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এর আগে ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’র তরফে সরাসরি তাঁর বিরুদ্ধে ‘পক্ষপাতদুষ্টতার’ অভিযোগ তোলা হয়েছিল।