জ্ঞানবাপী মসজিদ এবং কাশী বিশ্বনাথ মন্দির। ফাইল চিত্র।
আদালতের নির্দেশের পরেই বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে মোতায়েন করা হল সিআরপিএফ। ভূগর্ভস্থ ঘর (তহ্খানা), ওজুখানা এবং আশপাশের এলাকা সিল করে দিল উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন।
শনিবার থেকে মসজিদের অন্দরের দু’টি গম্বুজ, ভূগর্ভস্থ অংশ, পুকুর-সহ সব জায়গার পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফি করে সোমবার বারাণসীর আদালতে রিপোর্ট পেশ করা হয় সমীক্ষক দলের তরফে। তার পরেই কয়েকটি এলাকা সিল করে সিআরপিএফ মোতায়েনের নির্দেশ দেয় আদালত। বারাণসীর জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনারের পাশাপাশি সিআরপিএফের এক জন কমান্ডান্ট (সুপার) স্তরের আধিকারিককে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন নগর-দায়রা আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকর।
আবেদনকারী হিন্দুত্ববাদী পক্ষের আইনজীবী হরিশঙ্কর জৈন সোমবার বলেন, ‘‘ওজুখানার পুকুরে শিবলিঙ্গের অস্তিত্ব মেলার কারণেই আদালত এই পদক্ষেপ করেছে।’’ আবেদনকারী পক্ষের আর এক আইনজীবী মদনমোহন যাদবের দাবি, মসজিদের পশ্চিমের দেওয়ালের অদূরে অবস্থিত নন্দীমূর্তির মুখ রয়েছে শিবলিঙ্গের দিকে। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট সোমবার জানিয়েছেন, জ্ঞানবাপীতে সমীক্ষা ও ভিডিয়োগ্রাফি বন্ধের দাবিতে দায়ের করা আবেদনের শুনানি হবে মঙ্গলবার।
প্রসঙ্গত, হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, জ্ঞানবাপী মসজিদ যে জমিতে গড়ে উঠেছে, তা আদতে হিন্দুদের। সুতরাং সেই জমি হিন্দুদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক। মুঘল সম্রাট অওরঙ্গজেব দু’হাজার বছরের পুরনো কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের একাংশ ধ্বংস করে সেখানে মসজিদ গড়ে তোলেন দাবি তুলে সেখানে ‘হিন্দুত্বের ছাপ’ খুঁজতে প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষার দাবি জানানো হয় আদালতে।
অন্য দিকে, জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে ‘দেবদেবীর মূর্তি’ আছে দাবি করে সেগুলি পুজো করার অনুমতি চেয়ে ২০২১-এ আদালতে একটি পৃথক আবেদন আবেদন করেন পাঁচ মহিলা। তারই জেরে গত বৃহস্পতিবার বারাণসীর জেলা আদালত জ্ঞানবাপী মসজিদের প্রত্নতাত্ত্বিক সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিল ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া)-কে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়।