দু’বছর পরে লোকসভা নির্বাচন। তার আগেই অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরি করে ফেলতে চায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। আজ দিল্লিতে ‘শ্রী রাম জন্মভূমি আন্দোলন—এক নব জাগরণ’ শীর্ষক আলোচনায় পরিষদের নেতা সুরেন্দ্র জৈন দাবি করেন, আগামী বছরের গোড়াতেই রামমন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে যাবে। চেষ্টা করা হবে, যাতে ওই বছরের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যায়। মন্দির নির্মাণ প্রশ্নে নরেন্দ্র মোদী সরকারের উপরে চাপ বাড়াতেই পরিষদ নেতৃত্ব ওই কথা বলেছেন বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা।
আরও পড়ুন: আলোচনা চেয়ে বার্তা হুরিয়তের
গত এপ্রিলে রামনবমীর সময়ে দিল্লির রামলীলা ময়দানে এক সভায় প্রয়োজনে আইন করে রামমন্দির বানানোর দাবি তুলেছিল পরিষদ। কিন্তু এখন এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে আর আলোচনায় না গিয়ে উল্টে সুর চড়াচ্ছে তারা। প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরে পরিষদের বক্তব্য, গোটা দেশে গেরুয়া (বিজেপি) রঙের বাড়বাড়ন্তের পিছনে অন্যতম মূল কারণ রামমন্দির আন্দোলন। সুরেন্দ্র জৈনের কথায় ‘‘রামমন্দির বানানো, গো-হত্যা কিংবা লাভ জেহাদ রোখাও কিন্তু কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।’’ কার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে, তা খোলসা না করলেও রাজনৈতিক শিবিরের মতে, এ ক্ষেত্রে সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের দিকেই আঙুল তুলেছেন ওই পরিষদ নেতা।
প্রশ্ন হল, সরকারের তিন বছর কেটে যাওয়ার পরে কেন এই দাবি তুলছে পরিষদ? রামমন্দিরের বিষয়টি এখন শীর্ষ আদালতে। এ বছরের শেষে ওই মামলার চূড়ান্ত শুনানি শুরু হবে। পরিষদের আশা, রায় তাদের পক্ষেই যাবে। সে কারণে গুজরাত-রাজস্থান থেকে ইতিমধ্যেই নির্মাণের পাথর আসতে শুরু করেছে অযোধ্যায়। একই সঙ্গে আদালতের রায়ের আগেই পরিষদ চাইছে, রামমন্দিরের পক্ষে গোটা দেশে প্রবল জনমত তৈরি করে রাখতে। তাতে অবশ্য ক্ষতি নেই বিজেপিরও। বিশেষ করে ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচন ও তার ঠিক আগে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তাই পরিষদের রামমন্দির আন্দোলনের মাধ্যমে যদি হিন্দুভোট একজোট হয়, তা হলে ভোটের বাক্সে দল সুফল পাবে বলেই মনে করছে শাসক শিবির। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘প্রচারে গিয়ে যতই উন্নয়নের কথা বলি না কেন, জয় শ্রীরাম বলা মাত্রই উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন বিজেপি সমর্থকেরা। এটা এক ধরনের মন্ত্রশক্তি। আর এটাই দলের অন্যতম চালিকাশক্তি।’’