T20 World Cup Celebration

অহঙ্কার মাথায় চড়লে ..., চর্চা বিরাট-মন্তব্যে

বিরাট কোহলি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ক্রিকেটের প্রসঙ্গেই কথাগুলো বলেছিলেন গতকাল। কিন্তু রাজনীতির ক্ষেত্রেও কি একই কথা প্রযোজ্য?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪ ০৮:৫৬
Share:

প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বিশ্বজয়ীরা। —ফাইল চিত্র।

‘যদি মনে হয়, আমি তো এটা করেই ফেলব, তখনই অহঙ্কার মাথায় চড়ে বসে। আর অহঙ্কার মাথায় চড়ে বসলেই খেলা হাত থেকে বেরিয়ে যায়!’

Advertisement

বিরাট কোহলি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ক্রিকেটের প্রসঙ্গেই কথাগুলো বলেছিলেন গতকাল। কিন্তু রাজনীতির ক্ষেত্রেও কি একই কথা প্রযোজ্য? বিরাট কোহলির এই মন্ত্র কি নরেন্দ্র মোদীর কাছেও শিক্ষণীয়? টি-২০ বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবারই তাঁর বাসভবনে কথাবার্তা বলেছিলেন। সেই কথাবার্তার পুরো ভিডিয়ো আজ প্রধানমন্ত্রীর দফতর প্রকাশ্যে এনেছে। আর তারপরেই কোহলির মন্তব্যের মধ্যে মোদীর প্রতি বার্তা রয়েছে কি না, তা নিয়ে চর্চায় উত্তাল নেট-দুনিয়া!

বিরোধী দলের রাজনীতিকরা মনে করছেন, লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদীর মাথায় অহঙ্কার চড়ে বসেছিল। তাই তিনি ‘চারশো পার’-এর লক্ষ্য স্থির করেছিলেন। সেই অহঙ্কারের জন্য তাঁর হাত থেকে লোকসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা বেরিয়ে গিয়েছে। চারশো-র বদলে বিজেপির আসন সংখ্যা ২৪০-এ নেমে এসেছে! কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে সংসদে দাঁড়িয়েই বলেছিলেন, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের ফল প্রধানমন্ত্রীর অহঙ্কার দুমড়ে দিয়েছে।

Advertisement

কেন হঠাৎ অহঙ্কারের কুফলের কথা বললেন বিরাট কোহলি? প্রধানমন্ত্রী তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, বিশ্বকাপের ফাইনালের আগে বিরাট গোটা টুর্নামেন্টে মাত্র ৭৫ রান করেছিলেন। আর ফাইনালে গিয়ে একেবারে ৭৬ রান। এক-একটা সময় আসে, যখন সবাই বলে, তুমিই করে ফেলবে! বিরাট তার জবাবে বলেন, “যা চেষ্টা করছিলাম, তা হচ্ছিল না। যখন আপনার মনে হয়, আমি এটা করে ফেলব, তখন কোথাও না কোথাও অহঙ্কার চলে আসে। আর হাত থেকে খেলা বেরিয়ে যায়। সেই অহঙ্কার ঝেড়ে ফেলা দরকার ছিল। আর ফাইনালের দিন পরিস্থিতি এমন ছিল যে অহঙ্কার পিছনে সরিয়ে রাখতে হয়েছিল। আর খেলাকে সম্মান দিলে খেলাও পাল্টা সম্মান দিয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতীয় দলের সঙ্গে কথাবার্তার সময়ে ফাইনাল ম্যাচ ও কাপ জেতার পরে নানা দৃশ্যের ভিডিয়োও ঘরের দেওয়ালে দেখানো হচ্ছিল। মাইক হাতে প্রধানমন্ত্রী প্রায় সাংবাদিকদের মতো সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ক্রিকেটারদের। রোহিত শর্মাকে প্রশ্ন করেছেন, তিনি কেন পিচের মাটি মুখে নিয়েছিলেন? কেন নাচতে নাচতে কাপ নিতে গিয়েছিলেন? রোহিত উত্তর দেন, তিনি ওই সময়টা নিজের মধ্যে ধরে রাখতে চেয়েছিলেন। যে পিচে লড়াই, সেই পিচের মাটির স্বাদ নিতে চেয়েছিলেন। শুনে মোদী বলেন, “একমাত্র ভারতীয়রাই এমনটা করতে পারে।” নাচতে নাচতে কাপ হাতে তুলে যাওয়ার বুদ্ধি যজুবেন্দ্র চহালের ছিল কি না, তা জানতে চান মোদী। রোহিত উত্তর দেন, চহাল ও কুলদীপের পরিকল্পনাতেই এমনটা হয়েছিল।

সড়ক দুর্ঘটনার পরে ঘরবন্দি হয়ে পড়া ঋষভ পন্থের মাঠে ফিরে আসা নিয়েও কথা বলেন মোদী। বলেন, “আমি দুর্ঘটনার পরে ঋষভের মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলাম। চিকিৎসার প্রয়োজনে বিদেশে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছিলাম। কিন্তু ওঁর মা উল্টে আমাকেই আশ্বস্ত করেন।” মোদী বলেন, ঋষভ যখন দুর্ঘটনার জন্য কাউকে দোষ না দিয়ে নিজেরই ভুল মেনে নিয়েছিলেন, তখনও তাঁর ভাল লেগেছিল।

গুজরাতের জসপ্রীত বুমরার কাছে প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, ওয়েস্ট ইন্ডিজে পরোটা পাওয়া যাচ্ছিল কি না! ফাইনালে হার্দিক পাণ্ড্যর শেষ ওভার এবং সূর্যকুমার যাদবের ক্যাচ নিয়েও মোদী কথা বলেন। হার্দিক বলেন, সূর্য ক্যাচ ধরার পরে তাঁরা উল্লাস শুরু করেন। পরে খেয়াল হয়, সূর্যকে জিজ্ঞাসা করা প্রয়োজন, ক্যাচটা ঠিক মতো ধরেছে কি না! সূর্য জানান, তিনি এ রকম ক্যাচ ধরার প্র্যাকটিস করেছিলেন। শুনে আশ্চর্য হয়ে প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, এ রকম বল লুফে তা ছেড়ে দিয়ে ফের লোফার প্র্যাকটিসও করানো হয়! কোচ রাহুল দ্রাবিড় জানান, একা সূর্যই আইপিএল-এর পর থেকে এ রকম ১৫০-১৬০টি ক্যাচ লোফার প্র্যাকটিস করেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement