প্রতীকী ছবি।
গো-হত্যা করে ‘পাপ’ করেছেন। সেই ‘পাপে’র প্রায়শ্চিত্ত করতে ভিক্ষে করতে হবে। এমনকী ‘পাপ’ ধুয়ে ফেলতে গঙ্গাতেও ডুব দিতে হবে। না হলে সারা জীবনের মতো একঘরে করা হবে। নিদান মধ্যপ্রদেশের এক গ্রাম পঞ্চায়েতের। আর সেই নিদান মানতে গিয়ে রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়েন ভিন্ডের শ্রীনিবাস নগরের বছর ষাটেকের বৃদ্ধা কমলেশী দেবী।
ঠিক কী ঘটেছিল?
আরও পড়ুন
রঞ্জি খেলোয়াড়ের ফ্ল্যাটে স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার
গত শুক্রবারের ঘটনা। বাড়ির গোয়ালে কাজ করছিলেন কমলেশী দেবী। সে সময় একটি বাছুরের গলার দড়ি ধরে টানাটানি করতে গিয়ে তা কোনও ভাবে জড়িয়ে যায়। কিছুতেই তা ছাড়াতে পারছিলেন না কমলেশী দেবী। টানাটানিতে বাছুরের গলায় দড়ি আরও বসে যেতে থাকে। সেখানেই মারা যায় বাছুরটি। খবর জানতে পেরে গত শনিবার বিচারসভা বসে গ্রামে। তাতেই কমলেশী দেবীর বিরুদ্ধে নিদান দেন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যেরা। সাত দিন ধরে আশপাশের গ্রামে ভিক্ষে করতে হবে তাঁকে। আর সেই টাকায় গঙ্গাস্নানও করতে হবে। না হলে নাকি গো-হত্যার ‘পাপ’ ধোওয়া যাবে না। পঞ্চায়েতের নিদান মানতে পাশের গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে ভিক্ষে করা শুরু করেন কমলেশী দেবী। এর পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। শারীরিক অবস্থার এতটাই অবনতি হয় যে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় তাঁকে। গত রবিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন
কঙ্কালের উপরে ঘুমিয়েছি! আতঙ্কে পরিবার
কমলেশী দেবীর ছেলের অনিল শ্রীবাসের দাবি, পঞ্চায়েতের ভয়েই মুখে কুলুপ এঁটেছেন গ্রামের লোকজন। এ নিয়ে পুলিশে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। স্থানীয় থানার আধিকারিক অনিল সিংহ কুশওয়াহা বলেন, “এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তবে নিশ্চয়ই আমরা ব্যবস্থা নেব।” তবে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শম্ভু শ্রীবাসের পাল্টা দাবি, “পঞ্চায়েতের সদস্যদের ডেকে ওই মহিলাই প্রায়শ্চিত্ত করতে চেয়েছিলেন।”
এই ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক ইলাইয়ারাজা টি।