এই তিন যুবককে সাজানো সংঘর্ষে থুনের অভিযোগ কাশ্মীরে— ফাইল চিত্র।
চাকরিতে পদন্নোতি আর বাহবা পাওয়ার লোভে নিরীহ গ্রামবাসীকে জঙ্গি সাজিয়ে খুনের অভিযোগ নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে আগেও উঠেছে উপত্যকায়। এ বার জম্মু ও কাশ্মীরে ৩ যুবককে ডেকে এনে সাজানো সংঘর্ষে খুনের অভিযুক্ত হল সেনা এবং পুলিশ। নিহতদের মধ্যে দু’জন ছাত্র। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো সামনে আসায় নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
সেনা এবং পুলিশের দাবি, ৩০ ডিসেম্বর রাতে রাজধানী শ্রীনগরের উপকণ্ঠে লায়েপোরার একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে এনকাউন্টারে ৩ জঙ্গি— এইজাজ মকবুল গনি, জুবের লোন এবং আতের মুস্তাক ওয়ানির মৃত্যু হয়। মকবুল পুলওয়ামার পুত্রিগামের বাসিন্দা। মুস্তাকের বাড়ি ওই জেলারই বালোভে। অন্য দিকে, জুবের সোপিয়ান জেলার তুর্কওয়ানগামের বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে। সেনা এবং পুলিশের দাবি, ৩ জনেই পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার ঘনিষ্ঠ সংগঠন ‘দি রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)-এর সদস্য।
যদিও নিহতদের পরিবারের অভিযোগ, জঙ্গিদের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগাযোগই নেই। সেনা, পুলিশ এবং রাষ্ট্রীয় রাইফেলস তাঁদের তুলে নিয়ে গিয়ে সাজানো সংঘর্ষে খুন করেছে। বস্তুত, সাজানো সংঘর্ষের দাবিই জোরাল করেছে সম্প্রতি সামনে আসা ২টি ভিডিয়ো ফুটেজ। প্রথমটিতে দেখা যাচ্ছে, ওই বাড়িটি ঘিরে ফেলে নিরাপত্তা বাহিনী ৩ জনকে অস্ত্র ফেলে বাইরে আসার ‘আবেদন’ জানাচ্ছে। কিন্তু বাড়ির ভিতরে কারও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি, ‘আত্মগোপনকারী জঙ্গি’রা গুলিও ছুড়ছে না।
আরও পড়ুন: গৃহীদের মতোই শ্রী শ্রী সারদামণি ছিলেন বিপ্লবীদেরও মা
ভিডিয়োটি ড্রোন থেকে তোলা। সেখানে ওই বাড়ির উপর আলো ফেলেও কারও উপস্থিতি নজরে পড়ছে না। এর আগে অন্য একটি ভিডিয়োয় এক পুলিশ অফিসারকে আত্মসমর্পণের আবেদন জানাতে দেখা যাচ্ছে। মকবুল এবং মুস্তাকের পরিবারের দাবি, কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির ফর্ম তোলার উদ্দেশ্যে ৩০ ডিসেম্বর সকালে তাঁরা বাড়ি থেকে বার হয়েছিলেন। জুবেরের পরিবার ও পরিজনেরা জানাচ্ছেন, তিনি কাঠের আবসাব বানানোর পেশায় যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ১৩ জানুয়ারি থেকে করোনা টিকাকরণ, জানাল স্বাস্থ্য মন্ত্রক
পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, নিহতদের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন থেকে জানা গিয়েছে, মকবুল ও মুস্তাক ৩০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাননি। ওই দিন বিকেলে তাঁরা জুবেরের সঙ্গে শ্রীনগর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে হোকেসর এলাকায় একটি জলাভূমির ধারে ছিলেন। তবে নিরাপত্তাবাহিনী তাঁদের ধরে জোর করে সেখানে নিয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ নিহতদের পরিবারের।