—প্রতীকী ছবি।
উন্নাওয়ের প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া ধর্ষিতা এ বার অভিযোগের আঙুল তুললেন নিজের পরিবারের দিকেই। সরকার এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার থেকে প্রাপ্ত অর্থ তাঁর থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং তাঁর নামে সরকারের বরাদ্দ করা বাড়ি থেকে তাঁকেই বার করে দেওয়া হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। নিজের মা-বোন-সহ পরিবারের মোট চার জনের বিরুদ্ধে এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ে তৎকালীন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং তাঁর বাবাকে খুন করার অভিযোগ তুলেছিলেন এই নির্যাতিতা। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে গায়ে আগুন দিতেও গিয়েছিলেন। ২০১৭ সালে তখনই খবরের শিরোনামে আসে উন্নাও ধর্ষণ মামলা। মেয়েটি তখনও নাবালিকা। পরে অপহরণ ও ধর্ষণ প্রমাণিত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় কুলদীপের।
সেই প্রতিবাদিনী নির্যাতিতা এখন বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন। বর্তমানে তিনি অন্তঃসত্ত্বা। এই অবস্থায় তিনি এ বার মুখ খুলেছেন তাঁর পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধেই। মেয়ের মাকে গত বছর উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট দিয়েছিল কংগ্রেস। মেয়ের কাকাকে কুলদীপ মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছিল বলে এর আগে মেয়েটির পরিবারের তরফে অভিযোগ উঠেছিল। কাকা ২০১৯ সাল থেকে জেলে রয়েছেন। বর্তমানে তিনি তিহাড়ে বন্দি। এখন নির্যাতিতার দাবি, নাবালিকা ছিলেন বলে তাঁর নামে বরাদ্দ অর্থের নাগাল তাঁর কাছে ছিল না। ইত্যবসরে তাঁর কাকা সেই অর্থের বড় অংশ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁর মা ও বোন কাকার অঙ্গুলিহেলনে চলছেন এবং তাঁরা এই চক্রান্তের অংশ বলেও অভিযোগ করছেন তিনি।
পুলিশের কাছে নির্যাতিতা দাবি করেছেন, তাঁর কাকা এক মহিলা বন্ধুর সাহায্যে নির্যাতিতার নামে গচ্ছিত টাকা তাঁর পারিবারিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরিয়ে ফেলেছেন। নির্যাতিতা টাকা চাইতে গেলে তাঁকে বলা হয়েছে, আইনি লড়াই লড়তে গিয়ে ৭ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, দিল্লিতে তাঁকে একটি বাড়ি দেওয়া হয়েছিল। সেই বাড়ি থেকেও মা আর বোন মিলে তাঁকে বার করে দিয়েছেন। তাঁর স্বামীকে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন তাঁর বোন। তাঁর কাছে টাকা চেয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে। উন্নাওয়ের যে মাখি থানার নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে একদিন তিনি রাজপথে প্রতিবাদ করেছিলেন, এখন নিজের অনাগত সন্তান এবং স্বামীর সুরক্ষার জন্য সেই মাখি থানারই দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে তাঁর পরিবারের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।