ফাইল চিত্র।
উপরাষ্ট্রপতি পদে বিরোধী শিবিরের প্রার্থী নিয়ে আলোচনা থেকে তৃণমূলই আচমকা সরে গিয়েছিল বলে পাল্টা অভিযোগ করলেন কংগ্রেস, এনসিপি এবং অন্য বিরোধী দলের নেতারা। প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি বলে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী আজ অভিযোগ করেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো রাজনৈতিক মিথ্যাচারিতা করতে পারেন, এমন ব্যক্তি ভারতে আর কেউ নেই।’’ কংগ্রেস শিবিরের যুক্তি, কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ নিয়মিত তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং বাকিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। সেই আলোচনায় দু’টি নাম উঠে এসেছিল। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মতো যাতে আগেই সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম বাইরে না বেরিয়ে যায়, সে বিষয়ে কংগ্রেস ও অন্য দলের নেতাদের মতো তৃণমূলও মন্ত্রগুপ্তির শপথ নিয়েছিল। বাইরে তা ফাঁসও হয়নি। ১৬ জুলাই কংগ্রেসের রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে সব দলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৭ জুলাই বৈঠকে বসার আহ্বান জানান। সে দিনই তৃণমূল জানিয়ে দেয়, তাঁরা কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে যোগ দেবে না। কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে কিছু বিরোধী দলের অসুবিধা হতে পারে ভেবে শরদ পওয়ারের বাড়িতে বৈঠক হয়। তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সে দিন দিল্লিতে সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে যোগ দিলেও ঠিক তার পরেই পওয়ারের বাড়ির বৈঠকে যাননি।
এনসিপি নেতাদের বক্তব্য, তৃণমূলের কেউ বৈঠকে না আসায় ১৭ জুলাই বৈঠকের সময় পওয়ার বার বার মমতার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মমতার দফতর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তিনি ভার্চুয়াল বৈঠকে ব্যস্ত রয়েছেন। তা সত্ত্বেও বৈঠকে পওয়ার নিজেই জানান, মমতা মেহবুবা মুফতিকে প্রার্থী করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তা নিয়ে আলোচনাও হয়। এনসিপি নেতৃত্বের প্রশ্ন, তৃণমূলকে এই প্রক্রিয়ায় শামিল করা না হলে মেহবুবার নাম এল কোথা থেকে!
অধীর চৌধুরীর অভিযোগ, জগদীপ ধনখড়কে মাঝখানে রেখে দার্জিলিংয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হিমন্ত বিশ্বশর্মার যে বৈঠক হয়েছিল, মমতা আজ সেই ‘দার্জিলিং চুক্তি’ পালন করলেন। কারণ, তাঁকে বিজেপির আশীর্বাদ পেতে হবে। অধীরের অভিযোগ, ফের ‘দিদি-মোদীর গোপন আঁতাঁত’ প্রমাণিত হল। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মমতা ভোটদানে বিরত থেকে আসলে জগদীপ ধনখড়কেই সুবিধা করে দিলেন।
বিজেপি নেতৃত্বও মানছেন, তৃণমূল ভোটদানে বিরত থাকায় এনডিএ-প্রার্থীর সুবিধাই হবে। জগদীপ ধনখড় আরও বড় ব্যবধানে জিতবেন। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সৈয়দ জাফর ইসলাম বলেন, ‘‘যশবন্ত সিনহাকে অনেক বিজেপি বিরোধী দল বা বিরোধী সাংসদ-বিধায়কদের অনেকে ভোট দেবেন না জেনেও তাঁকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বলা হয়নি। এখনতৃণমূলের সিদ্ধান্ত থেকে স্পষ্ট, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও আলোচনা করে বিরোধীরা প্রার্থীঠিক করেননি।’’