ফের অযোধ্যা নিয়ে কেন্দ্রকে চাপ সেনা এবং ভিএইচপি-র।
গন্তব্য অযোধ্যা। দ্রুত রামমন্দির নির্মাণের জন্য কেন্দ্রকে চাপ দিতে আগামী রবিবার, ২৫ নভেম্বর অযোধ্যায় আলাদা আলাদা সভা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) ও শিবসেনার। পুলিশ, র্যাফ, এটিএস, পিএসি বাহিনী আর ড্রোন ক্যামেরার নজরদারিতে শহর কার্যত দুর্গ।
ভিএইচপি-র সভায় রয়েছে সঙ্ঘের সমর্থন। তাতে অন্তত ৫০-৬০ হাজার লোকের জমায়েত হবে বলে মনে করছে পুলিশ। এ দিকে আজ মধ্যরাতে ও কাল ভোরে দু’টি ট্রেনে প্রায় ৪ হাজার শিবসৈনিকের অযোধ্যা পৌঁছনোর কথা। দু’তরফেরই দাবি, মন্দির গড়ার আসল দাবিদার তারাই। এবং আজ দিনভর পাল্লা দিয়ে বিতর্কিত ও উস্কানিমূলক মন্তব্য এল দুই শিবির থেকেই।
মন্দির তৈরিতে এত দিন সুর চড়িয়ে আসা সাক্ষী মহারাজ দাবি করলেন, দিল্লির জামা মসজিদের সিঁড়ির নীচে দেবমূর্তি রয়েছে। উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের এই বিজেপি সাংসদ বলেছেন, ‘‘অযোধ্যা, মথুরা, কাশী ছেড়ে আগে দিল্লির জামা মসজিদ ভাঙুন। সিঁড়ির নীচে মূর্তি না-মিললে আমাকে ফাঁসি দিতে পারেন।’’ রাজ্যের বিতর্কিত বিজেপি বিধায়ক সুরেন্দ্র সিংহ হুমকি দিয়েছেন, রামমন্দির তৈরি করতে প্রয়োজনে ১৯৯২ সালের মতো আইন হাতে তুলে নিতে পারেন তাঁরা।
নরেন্দ্র মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতের বক্তব্য, ‘‘১৭ মিনিটে বাবরি মসজিদ ভেঙেছিলাম। আইন তৈরি করতে কত সময় লাগে? রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে উত্তরপ্রদেশ পর্যন্ত বিজেপির সরকার রয়েছে। রাজ্যসভাতেও অনেকে পাশে দাঁড়াবেন। যাঁরা বিরোধিতা করবেন, তাঁদের এ দেশে থাকা মুশকিল হয়ে পড়বে।’’ মুখপত্রে শিবসেনা লিখেছে, ‘‘আমরা রামের নামে ভোটভিক্ষা করি না কিংবা ফাঁকা বুলি দিই না। যারা মসনদে বসে আছে, তারা রাম জন্মভূমিতে বাবরের রাজত্ব শেষ করা শিবসৈনিকদের নিয়ে গর্ববোধ করুক। বিজেপি অর্ডিন্যান্স আনুক এবং রামমন্দির নির্মাণের তারিখ বলুক।’’
দু’দিনের সফরে অযোধ্যা রওনা হয়েছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। সেখানে সরযূ নদীতে আরতির পাশাপাশি লক্ষ্মণ কিলা পার্কে সাধুদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা তাঁর। তবে উত্তরপ্রদেশে শিবসেনার জনভিত্তি সে ভাবে নেই বলে তাদের সঙ্গে ভিএইচপি-র সংঘাতের আশঙ্কা দেখছে না যোগী আদিত্যনাথের সরকার। তাদের সামনে মূল চ্যালেঞ্জ শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখা। ভিএইচপি জানিয়েছে, রবিবার অযোধ্যায় তাদের ওই ‘ধর্মসভা’ হল ‘যুদ্ধের আগে শেষ দামামা।’ এর পরে সরাসরি মন্দির নির্মাণই লক্ষ্য। একই দিনে নাগপুর এবং বেঙ্গালুরুতেও সভা করবে তারা।
পুলিশকর্তারা যদিও মনে করছেন, রবিবার কোনও পক্ষেরই অযোধ্যার বিতর্কিত জমির আশপাশে ধর্না বা অন্য কোনও কর্মসূচির পরিকল্পনা নেই। তা সত্ত্বেও গোটা এলাকায় আগেভাগেই জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। আগামিকাল সমস্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ। অখিলেশ যাদব দাবি তুলেছেন, সেনা নামান যোগী।