দিওয়ালির দিন সেনা শিবির প্রদর্শন করে সেনাবাহিনীর পাশে থাকার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর এ দিনও বিক্ষোভ-প্রদর্শন জারি রাখলেন অবসরপ্রাপ্ত সেনারা।
এক পদ এক পেনশন নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় অবসরপ্রাপ্ত সেনারা গত কাল পঞ্জাব-হরিয়ানার বিভিন্ন জায়গায় পদক ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। আজ দিল্লির যন্তর মন্তরে আগুনে পদক ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ জানালেন তাঁরা। এর পর রাষ্ট্রপতি ভবনের দিকে শুরু হয় প্রাক্তন সেনাদের মিছিল। রেল ভবন ও কৃষি ভবনের সংযোগস্থলে দিল্লি পুলিশ মিছিল আটকে দেয়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। এর পরই পুলিশের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগের অভিযোগ এনে সেখানেই বসে পড়েন বিক্ষোভকারীরা।
এক পদ এক পেনশন নীতিকে কেন্দ্র করে প্রাক্তন সেনারা নিজেদের দাবিতে অনড় থাকায় মুখরক্ষার উপায় খুঁজতে ব্যস্ত সরকার। অবসরপ্রাপ্ত ফৌজিদের দাবি, কোনও জুনিয়র যেন সেই পদে অবসর নেওয়া প্রাক্তন সিনিয়রের থেকে বেশি পেনশন না পান। কিন্তু সমান মেয়াদের চাকরি ও একই পদ থেকে অবসর নিলে সেই পদের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের গড় করে নতুন পেনশন স্থির করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। প্রাক্তনীদের দাবি ছিল, সর্বোচ্চ বেতনের নিরিখেই পেনশন দিতে হবে সরকারকে। কিন্তু তাতে সরকারের কোষাগার থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত গলে যেত। তাই নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে কেন্দ্রও।
এই পরিস্থিতিতে সেনাদের বার্তা দিতে আজকের দিনটিকে বেছে নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত বার এই দিনে গিয়েছিলেন সিয়াচেন। আজ সেনাবাহিনীর পাশে থাকার বার্তা দিতে অমৃতসরের ’৬৫ যুদ্ধের ডোগরি ওয়ার মেমোরিয়াল ঘুরে দেখেন তিনি। সেনাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনাদের বীরত্ব, কর্তব্যনিষ্ঠার কারণে গোটা পৃথিবী ভারতের সেনাকে সম্মানের চোখে দেখে। এটা শুধু আপনাদের পোশাকের কারণে নয়, সেনাবাহিনীর চরিত্রের কারণেই সকলে এ ভাবে আপনাদের সম্মান জানায়।’’
প্রাক্তন সেনারা যে ভাবে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন, তাতে ক্ষুব্ধ শাসক শিবির। গত কাল অবসরপ্রাপ্ত সেনাদের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। তিনি বলেছিলেন, ‘‘যে ভাবে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে তা মোটেই সেনাসুলভ নয়।’’ তার পরেই আজ কর্মরত সেনাদের প্রশংসায় সরব
হন মোদী।
শাসক শিবির দাবি করেছে, ৯০-৯৫ শতাংশ প্রাক্তন সেনা এক পদ এক পেনশন নীতিতে সন্তুষ্ট।
কিছু ব্যক্তি নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির কারণে এ ধরনের বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। মুষ্টিমেয় অবসরপ্রাপ্তরা যাই করুন, গোটা সেনাবাহিনী সরকারের পাশে আছে। প্রাক্তন সেনারা অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, দাবি না মেটা পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে।