কংগ্রেস আর বিজেপির মধ্যে মর্যাদার লড়াই ছিল গুরুদাসপুরে। সেই লড়াইতে বিপুল জয় কংগ্রেসের। ছবি: পিটিআই।
লোকসভা উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে বিপুল জয় কংগ্রেসের। পঞ্জাবের গুরুদাসপুর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীকে ১ লক্ষ ৯৩ হাজারের বেশি ভোটে হারিয়ে জয়ী হলেন কংগ্রেস প্রার্থী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুনীল জাখর। চার বার ওই লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন বলিউড হিরো বিনোদ খন্না। তাঁর মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। গোটা দেশে যখন গেরুয়া হওয়া, তখন বিজেপির শক্ত ঘাঁটি ভেঙে গুরুদাসপুর থেকে কংগ্রেসের জয় পঞ্জাবে বড় ধাক্কা দিল বিজেপিকে। বলছে রাজনৈতিক শিবির।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোট কবে, নবান্ন-রাজ্য নির্বাচন কমিশন দড়ি টানাটানি শুরু
আরও পড়ুন: গ্রামে মন দিন নরেন্দ্র মোদী, চায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ
চলতি বছরের গোড়াতেই এক দশকের অকালি-বিজেপি সরকারকে হঠিয়ে পঞ্জাবের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন অমরেন্দ্র সিংহ। সরকার গঠনের পর থেকে পঞ্জাবে কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা যে কমেনি, বরং বেড়েছে, তা বেশ স্পষ্ট গুরুদাসপুরের ফলাফল থেকে। ১৩ রাউন্ডের গণনা শেষে জানা গিয়েছিল কংগ্রেস প্রার্থী সুনীল জাখর তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থীর চেয়ে ১ লক্ষ ৮২ হাজার ১৬০ ভোটে এগিয়ে গিয়েছেন। সেই রাউন্ড পর্যন্ত জাখর পেয়েছিলেন ৪ লক্ষ ৫৬ হাজার ২৫০টি ভোট। বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৯০টি ভোট। আর পঞ্জাবের প্রধান বিরোধী দল আপের প্রার্থী পেয়েছিলেন মাত্র ২১ হাজার ৫০৯ ভোট। পরবর্তী কয়েকটি রাউন্ডে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেয় কংগ্রেস। বিজেপিকে প্রায় ২ লক্ষ ভোটে পিছনে ফেলে দেয় পঞ্জাবের শাসক দল।
১৯৯৮, ১৯৯৯ এবং ২০০৪— পর পর তিন বার গুরুদাসপুর থেকে জিতেছিলেন বিজেপির বিনোদ খন্না। ২০০৯ সালে তিনি হেরে যান। কিন্তু ২০১৪ সালে আবার জেতেন। চলতি বছরের এপ্রিলে বিনোদ খন্নার প্রয়াণে আসনটি খালি হয়। আসনটি ধরে রাখতে বিজেপি খুব জোরদার প্রচারে নেমেছিল। অন্যদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুনীল জাখরের হয়ে সর্বশক্তি নিয়ে ময়দানে নেমেছিল কংগ্রেসও। মোদী সরকারের নীতি দেশের মানুষ পছন্দ করছেন কি না, গুরুদাসপুরের নির্বাচনেই তা স্পষ্ট হয়ে য়াবে, এই নির্বাচনেই দেশের মানুষের মানসিকতার প্রতিফলন ঘটবে, ভোটের আগে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন সুনীল জাখর। স্বাভাবিক ভাবেই, বিপুল জয়ের পর তিনি বলছেন, এই রায় আসলে মোদী সরকারের জনবিরোধী নীতির প্রত্যাখ্যান।
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ এই জয়ের জন্য সুনীল জাখরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এই জয় পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের নীতির এবং উন্নয়ন কর্মসূচির জয় বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। পঞ্জাবের আর এক গুরুত্বপূর্ণ কংগ্রেস নেতা তথা মন্ত্রী নভজ্যোত সিংহ সিধু বলেছেন, ‘‘আমাদের দলের পরবর্তী সভাপতি রাহুল গাঁধীর জন্য এটি একটি অসামান্য দিওয়ালি উপহার।’’