মিষ্টিমুখ: উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত বেঙ্কাইয়া নায়ডুকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশে অমিত শাহ এবং বেঙ্কাইয়ার স্ত্রী উষা। দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
একই মতাদর্শের রাষ্ট্রপতি, স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী আগেই হয়েছেন। বাকি ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি। নরেন্দ্র মোদীর জমানায় আজ সেটিও পূর্ণ হল। গোপালকৃষ্ণ গাঁধীকে ২৭২ ভোটে হারিয়ে দেশের পঞ্চদশ উপরাষ্ট্রপতি হলেন বেঙ্কাইয়া নায়ডু। অঙ্কের চেয়েও প্রায় ৩৫টি ভোট বেশি পেলেন। যা স্পষ্ট করে দিল মোদী-বিরোধী জোটে ফাটলের চেহারা।
ভোটের আগেই অঙ্ক ছিল বেঙ্কাইয়ার পক্ষে। তবু লড়াই ছাড়েনি বিরোধী শিবির। নীতীশ কুমার, নবীন পট্টনায়করা বিরোধী প্রার্থী গোপালকৃষ্ণ গাঁধীকে সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছিলেন। এই দুই দলের মিলিত সাংসদ সংখ্যা ৪০। তার উপর কংগ্রেসের জমানায় মনোনীত সচিন তেন্ডুলকর, রেখার মতো সাংসদদের আনা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও গোপালকৃষ্ণের পক্ষে ভোট বাড়ল মাত্র ১৯টি! হল বিপুল ক্রস ভোটিং। বিরোধী শিবিরে অনেকে আবার ভোটই দিলেন না।
যে ১৪ জন এ দিন ভোট দেননি, তাঁদের মধ্যে ১২ জনই গোপালকৃষ্ণের সমর্থক শিবিরের। অনুপস্থিতদের মধ্যে শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ। তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রতিমা মণ্ডল, কুণাল ঘোষ, তাপস পালের সঙ্গে কংগ্রেসের মৌসম বেনজির নূর ভোট দেননি আজ। এ দিন ১১টি ভোট বাতিল হয়েছে। এগুলির সিংহভাগই গোপাল-শিবিরের। বিজেপির এক নেতার দাবি, ৩৫টির বেশি ক্রস ভোট হয়েছে বেঙ্কাইয়ার পক্ষে। এ দিন যে ভাবে ক্রস ভোট হয়েছে, তাতে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতারা।
বেঙ্কাইয়ার জয়ের সঙ্গে সঙ্গেই ভারতীয় রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায় শুরু হল। গত কাল রাতেই মোদী জানিয়েছিলেন, ২০১৭-২০২২ সাল পর্যন্ত সময়টিকে তিনি দেখছেন সব শীর্ষ সাংবিধানিক পদে সমান বিচারধারা, সমান সংস্কৃতির লোকের সমাবেশ হিসেবে। মোদী যেটি খোলাখুলি বলেননি, সেটি হল সঙ্ঘের মতাদর্শের লোকেরাই এখন সাংবিধানিক শীর্ষ পদগুলিতে।
রাজ্যসভা সামলানোর ‘পথ’ গত কালই বেঙ্কাইয়াকে দেখিয়েছেন মোদী। সেখানেই ‘শেষ বারের’ মতো প্রকাশ্যে মোদী-ভজনা করেছেন বেঙ্কাইয়া। যার ফলে সনিয়া গাঁধী আজ বেঙ্কাইয়াকে অভিনন্দন জানিয়েও মনে করিয়ে দেন, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে রাজ্যসভা চালানোই বড় চ্যালেঞ্জ।