পুলওয়ামায় সন্ত্রাসবাদী হামলার দিন তিনেকের মধ্যেই রাজস্থানের পোখরানে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করল ভারতীয় বায়ুসেনা।
ভারতীয় বায়ু সেনার শক্তি প্রদর্শনকে উল্লেখ করে কারও নাম না করেই বায়ুসেনা প্রধান বিএস ধানোয়া বলেন, ‘‘যুদ্ধ মহড়ায় নিজেদের ক্ষমতা দেখিয়েছি। শত্রুদের বোঝা উচিত, আমাদের তারা কখনওই হারাতে পারবে না।”
পুলওয়ামার অবন্তিপুরায় বৃহস্পতিবার বিকেলের জঙ্গি হামলায় নিহত হন ৪৯ জন জওয়ান। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল, দেহ ছিটকে পড়ে ৮০ মিটার দূরে! দেশ জুড়ে বদলা নেওয়ার প্রবল দাবির মধ্যেই পোখরানের আকাশে উড়ল দেশের একাধিক শক্তিশালী যুদ্ধবিমান। রাজস্থানের কাছেই পাক ভূখণ্ডের কার্যত নাকের ডগাতেই শৌর্য প্রদর্শন করল ভারত।
লেজার প্রযুক্তির সাহায্যে বোমা নিক্ষেপ, রকেট লঞ্চারের ব্যবহার করা হয়েছে এই মহড়ায়। রাতের পোখরানের আকাশে শুধুই ছিল আলোর ঝলকানি।
মিগ-২১, মিগ-২৭, মিগ-২৯, মিরাজ ২০০০-সহ ১৪০টি ফাইটার জেট, বেশ কিছু হেলিকপ্টার শক্তি প্রদর্শন করে এই মহড়ায়।
এলসিএ তেজস, অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার, আকাশ (সারফেস টু এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র), অস্ত্র (এয়ার টু এয়ার মিসাইল)-সহ সুখোই-৩০-এর মতো বিমানও রণকৌশল দেখিয়েছে।
প্রথম বার অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার, আকাশ (সারফেস টু এয়ার মিসাইল) সামরিক মহড়ায় অংশ নিল।
জাগুয়ার, মিগ ২১ বাইসন, আইএল ৭৮, হারকিউলিস,এএন-৩২ বিমানও অংশ নিয়েছে সামরিক অনুশীলনে। কর্মসূচির শেষে তেরঙায় আলোয় রাঙিয়ে গিয়েছে পোখরান রেঞ্জ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, উপর মহল থেকে কোনও নির্দেশ এলেই বায়ুসেনা যেন শক্তি প্রদর্শন করতে পারে, সেই জন্যই এই সেনা মহড়া।
সেনা প্রধান বিপিন রাওয়াত, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আধিকারিক-সহ উচ্চপদস্থ আরও অনেকেই সাক্ষী রইলেন এই মহড়ার। উপস্থিত ছিলেন বায়ু সেনার সাম্মানিক গ্রুপ ক্যাপ্টেন সচিন রমেশ তেন্ডুলকরও।
পুলওয়ামার হামলার পরে পদক্ষেপ করতে সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কোন পথে এগোনো হবে তা নিয়ে এখনও কিছুটা সংশয় রয়েছে সরকারের অন্দরে। কিন্তু জঙ্গি দমন নীতিতে আরও কড়া হবে ভারত, এই মহড়া দিয়েই তা প্রাথমিক ভাবে প্রমাণ হল, তা বলছেন অনেকেই।