—ফাইল চিত্র।
জেলবন্দি তেলুগু কবি ভারভারা রাওয়ের প্রাণ বাঁচানোর আর্জি জানাল তাঁর পরিবার। রবিবার জ়ুম ভিডিয়ো মারফৎ একটি সাংবাদিক বৈঠকে কবির স্ত্রী পি হেমলতা ও কন্যাদের দাবি, নভি মুম্বইয়ের তালোজা সংশোধনাগারে বন্দি কবির শারীরিক অবস্থা খুবই সঙ্কটজনক। কিন্তু তাঁর চিকিৎসা হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে পরিবারের আর্জি, কবিকে সত্ত্বর কোনও ভাল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হোক কিংবা সরকার অপারগ হলে পরিবারকে ভারভারার চিকিৎসা করার সুযোগ দেওয়া হোক। হেমলতার বক্তব্য, ‘‘দয়া করে জেলের মধ্যেই ওকে মরতে দেবেন না।’’
রাওকে দ্রুত উন্নত হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার ব্যাপারে মহারাষ্ট্র সরকার ও জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাকে আর্জি জানিয়েছেন ইতিহাসবিদ রোমিলা থাপার, অর্থনীতিবিদ প্রভাত পট্টনায়ক-সহ বিশিষ্ট জনেরাও। তাঁরা এর আগে এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলাও করেছিলেন।
ভীমা কোরেগাঁও মামলায় ২০১৮ সালে গ্রেফতার করা হয় অশীতিপর ভারভারাকে। তার পর থেকে বেশ কয়েক বার জামিনের আর্জি জানালেও তা খারিজ হয়ে গিয়েছে। এমনকি কোভিড পরিস্থিতিতেও গত ২৭ জুন রাওয়ের জামিনের আর্জি খারিজ করে আদালত। এ দিন রাওয়ের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, গত ২৮ মে অচেতন অবস্থায় জেল থেকে তাঁকে জে জে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিন দিন পরে ফের তাঁকে জেলে ফেরত পাঠানো হয়। গত ২৪ জুন ও ২ জুলাই জেল থেকে ফোনে বাড়িতে কথা বলার সময় হেমলতা ও মেয়েরা লক্ষ করেন, বৃদ্ধ কবি অসংলগ্ন কথা বলছেন। এমনকি তেলুগুভাষী কবি হিন্দিতে কথা বলছেন। স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতেও সমস্যা হচ্ছিল তাঁর। শনিবার ফের ফোনে কথা বলতে গিয়ে বিপদ টের পান কবির বাড়ির লোকেরা। তাঁরা জানান, কবি শারীরিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে অসংলগ্ন কথা বলছিলেন। তিন-চার দশক আগে তাঁর বাবা-মায়ের শেষকৃত্যের বিবরণ দিচ্ছিলেন। যা থেকে হেমলতারা বুঝতে পারেন কবির ‘হ্যালুসিনেশন’ হচ্ছে। এর পরেই কবির এক সহ-বন্দি ফোন ধরে জানান, কবি প্রচণ্ড অসুস্থ। তিনি উঠতে পারছেন না, এমনকি শৌচাগার যেতে বা দাঁত মাজতেও পারছেন না। কবির পরিবারের বক্তব্য, কবির স্নায়ুর সমস্যা দেখা যাচ্ছে। তার উপরে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যের অভাব দেখা দিচ্ছে। তার ফলে মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। হেমলতার বক্তব্য, "তালোজা জেল হাসপাতালের এই ধরনের চিকিৎসার পরিকাঠামো নেই। তাই অবিলম্বে উন্নত হাসপাতালে কবিকে ভর্তি করানো প্রয়োজন।"
আরও পড়ুন: বিকাশ-তদন্তে যোগ বলিউড খ্যাত দয়ার
আরও পড়ুন: ২৮ হাজারের বেশি করোনা-আক্রান্ত গত ২৪ ঘণ্টায়
বিশেষজ্ঞ আইনজীবীরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতিতে বৃদ্ধ ও অশক্ত বন্দিদের জামিনে মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। বহু ক্ষেত্রে শীর্ষ আদালতও তাতে সম্মতি দিয়েছে। ভারভারা রাও কোনও জঙ্গি নন যে ছাড়া পেয়েই বিপজ্জনক কাণ্ড ঘটাবেন। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফেও কেন জামিনের বিরোধিতা করা হচ্ছে, তা নিয়েও তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন। আজ এলগার পরিষদ মামলায় জামিন পাননি সমাজকর্মী গৌতম নওলাখাও।