শেষ বেলায় খেলা ঘোরাতে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের ফের বুড়ো হাড়ে ভেলকিই ভরসা! গোটা কেরল শিবির যখন পশ্চিমবঙ্গ থেকে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে সীতারাম ইয়েচুরির রাজ্যসভায় যাওয়ার বিরুদ্ধে, তখন ভি এস অচ্যুতানন্দন আলিমুদ্দিনের পাশে দাঁড়িয়ে পড়লেন। কেরলের এই নবতিপর নেতার মতে, ইয়েচুরির রাজ্যসভায় থাকা দলের জন্য জরুরি। কেন্দ্রীয় কমিটিতে এ জন্য জোর সওয়াল করতে চলেছেন ভি এস।
পলিটব্যুরোয় রবিবার ভোটাভুটিতে ইয়েচুরিকে রাজ্যসভায় পাঠানোর প্রস্তাবে হেরে গিয়েছিল আলিমুদ্দিন। বাংলার নেতাদের দাবি ছিল, সোমবার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের প্রথম দিনেই এ বিষয়ে আলোচনা হোক। কিন্তু প্রকাশ কারাটের অনুগামীদের আপত্তিতে তা হয়নি। ঠিক হয়েছে, আজ, মঙ্গলবার এই নিয়ে আলোচনা হবে। ভি এস এখন পলিটব্যুরোয় না থাকলেও কেন্দ্রীয় কমিটির বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য। বৈঠকে যোগ দিতে তিনি দিল্লি এসেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি বাংলার নেতাদের দাবির পাশে।
এর আগেও বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে সংঝোতার প্রশ্নে বাংলার পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন ভি এস। পিনারাই বিজয়নেরা আপত্তি তুলেছিলেন, বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে দলের আঁতাঁত হলে কেরলে তাঁদের কংগ্রেসের সঙ্গে লড়তে অসুবিধা হবে। ভি এস সেই যুক্তি মানতে চাননি। এ বারও তাঁর মত, রাজ্যসভার ভোটে কংগ্রেসের সমর্থন নিতে এত বাছবিচারের কিছু নেই।
ইয়েচুরির সমস্যা হল, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাঁকে পার্টি লাইন মেনে আদর্শগত অবস্থানে থাকতে হচ্ছে। কারণ, কারাটের বেঁধে দেওয়া বিগত পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক লাইন বলছে, জাতীয় বা রাজ্য রাজনীতিতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হবে না। ইয়েচুরি সেই লাইন বদলাতে চান। কিন্তু এখনই উল্টো পথে হাঁটলে আগামী বছর পার্টি কংগ্রেসে তাঁর বিরুদ্ধেই পার্টি লাইন রক্ষা করতে না পারার অভিযোগ তুলবেন কারাট-এস আর পিল্লাইরা। বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার পরে সেই অভিযোগ উঠেছে। আগামী বছর পার্টি কংগ্রেসের জন্য কবে নিচু স্তর থেকে সম্মেলন হবে, তার ‘টাইম-টেবিল’ এই কেন্দ্রীয় কমিটিতেই ঠিক হবে।
শেষ পর্যন্ত ইয়েচুরি প্রার্থী না হলে রাজ্যসভা নির্বাচনে বাংলার সিপিএম বিধায়কেরা কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে দলে। কারণ, যদি পার্টি লাইন মানতে গিয়ে কংগ্রেসের সমর্থন নেওয়া না যায়, তা হলে কংগ্রেসকে ভোটই বা দেওয়া যাবে কী করে? সিপিএম বিধায়কেরা রাজ্যসভায় কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট না দিলে আসনটি ছিনিয়ে নিতে পারে তৃণমূল। সব সম্ভাবনা মাথায় রেখেই এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে কারাটদের।