কমলেশ তিওয়ারি (বাঁ দিকে)। সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে দুই সন্দেহভাজনের ছবি। —ফাইল চিত্র।
হিন্দু সমাজ পার্টির সভাপতি কমলেশ তিওয়ারির হত্যাকাণ্ডে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে ছ’জনকে। আজ লখনউয়ে কমলেশের বাড়ির কাছে একটি হোটেল থেকে কয়েকটি পোশাক ও ব্যাগ উদ্ধার করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। সিসিটিভিতে দেখা সন্দেহভাজনদের পোশাকের সঙ্গে উদ্ধার হওয়া পোশাকের সাদৃশ্য রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মনে করা হচ্ছে, খুনের আগের রাতে হোটেলটিতে ঢুকেছিল আততায়ীরা। খুনের পরে পোশাক বদলে হোটেল ছাড়ে তারা।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে আজ দেখা করে কমলেশের পরিবার। বৈঠকের পরে কমলেশের স্ত্রী কিরণ জানান, দোষীদের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন তাঁরা। সুবিচারের আশ্বাস দিয়েছেন যোগী। তবে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও অসন্তুষ্ট কমলেশের মা কুসুম। তাঁর ছেলেকে স্থানীয় এক বিজেপি নেতা খুন করেছেন বলে অভিযোগ করে আগেই প্রশাসনের উপরে তোপ দেগেছিলেন তিনি। আজ তিনি দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই পুলিশ জোর করে বৈঠক করতে বাধ্য করেছে। যোগীর কাছে তাঁরা জানতে চান, কমলেশের নিরাপত্তা কেন প্রত্যাহার করা হয়েছিল? নিরাপত্তার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র রাখার লাইসেন্সের আবেদনও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানিয়েছে কমলেশের পরিবার।
উত্তরপ্রদেশের ডিজিপি ও পি সিংহ জানিয়েছিলেন, তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করার জন্য গুজরাত ও মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাস দমন শাখার সঙ্গে যোগাযোগ করছে রাজ্য পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে দু’জন উত্তরপ্রদেশের, তিন জন গুজরাতের ও এক জন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। ধৃতদেরই আততায়ী হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে কি না, সে কথা স্পষ্ট করেনি পুলিশ। হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে সন্দেহভাজনদের ঢুকতে ও বেরোতে দেখা গিয়েছে। শুক্রবার ভোরে বেরোনোর সময়ে তাদের পরনে ছিল কুর্তা। সঙ্গে হলুদ রঙের একটি ব্যাগ। পুলিশ জানাচ্ছে, এমন একটি ব্যাগে করেই মিষ্টি নিয়ে কমলেশের বাড়ি ঢুকেছিল আততায়ীরা। ‘মিষ্টির’ ওই বাক্স থেকেই নাকি হাতিয়ার বার করে তারা। কমলেশের বাড়ির বাইরে লাগানো সিসি ক্যামেরাতেও ধরা পড়েছে সন্দেহভাজনদের ছবি। পুলিশ মনে করছে, এরা গুজরাত থেকে ট্রেনে কানপুর এসেছিল। সেখান থেকে ট্রেনে বা বাসে চেপে লখনউয়ে আসে।
কমলেশের পরে তাঁকেও ‘জেহাদি’-রা খুন করতে পারে বলে আশঙ্কা হিন্দু নেত্রী সাধ্বী প্রাচীর। তিনি জানান, কয়েক দিন আগে কিছু অচেনা লোক তাঁর আশ্রমে গিয়ে খোঁজ শুরু করে। তার পর থেকেই প্রাণনাশের আশঙ্কা করছেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, উত্তরাখণ্ড ও উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন তিনি। উত্তরপ্রদেশে সাম্প্রতিক কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের শিরোনাম-সহ আজ টুইট করেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। সঙ্গে লেখেন, ‘‘রাজ্য সরকার অপরাধ রুখতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।’’ তবে কমলেশের পরিবারের সঙ্গে যোগীর বৈঠককে ‘উপযুক্ত পদক্ষেপ’ বলেছেন অখিলেশ যাদব।