সাক্ষাৎ: দিল্লিতে যোগী-মোদী। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশে পুরভোটে জয়ের ধারা বজায় রেখেছে বিজেপি। যদিও তার পরেও হারতে নারাজ সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি। তারা পুরভোটে পরাজয়ের খলনায়ক হিসেবে তুলে ধরেছে ইলেকট্রনিক ভোটযন্ত্রকেই। দুই দলেরই দাবি, ইভিএমে কারচুপি করে ভোটে জিতেছে বিজেপি। ব্যালটে ভোট হলে নির্ঘাত হারত নরেন্দ্র মোদীর দল।
কলকাতার মহাজাতি সদনে শনিবার দলের রাজ্য সম্মেলনে এসেছিলেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘১৬টি পুরসভার মধ্যে ১৪টিতে বিজেপি জিতেছে। এমন প্রচার হচ্ছে যেন, সমাজবাদী পার্টির নাম-নিশান সেখানে মুছে গিয়েছে! কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যেখানে ভোট দিয়েছেন, সেই ওয়ার্ডে বিজেপি হেরেছে! উপমুখ্যমন্ত্রীর জেলাতেও বিজেপি হেরেছে!’’ এর পরেই অখিলেশ দাবি করেন, ‘‘যেখানে ইভিএমে ভোট হয়েছে, সেখানে বিজেপি পেয়েছে ৪৭% ভোট। আর যেখানে ব্যালটে ভোট হয়েছে, সেখানে বিজেপি ১৫%-এ নেমে গিয়েছে।’’ প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশের সদ্য সমাপ্ত পুরভোটের কিছু কিছু জায়গায় ভোট হয়েছে ব্যালট পেপারে। ইভিএমেও ভোট হয়েছে কোথাও কোথাও।
আরও পড়ুন: যোগীই এখন ভরসা মোদীর
পুরভোটের পরে দেখা যাচ্ছে, মায়াবতীর বসপা-র মেয়র এখন মাত্র দু’জন। মায়াবতী এ দিন দাবি করেন, ২০১৯-এর সাধারণ নির্বাচনে ইভিএমের বদলে ব্যালট পেপার ব্যবহার হলেই গেরুয়া শিবির হারবে। পুর-নির্বাচনে পর্যুদস্ত হওয়ার পরেও দমেননি দলিত নেত্রী। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘এই ফলে প্রমাণিত হয় না যে, মানুষের সমর্থন বিজেপির দিকে। এই দাবি করতে হলে, আগে ইভিএমের ঢাল সরাক তারা। ব্যালটে লড়াইয়ে নেমে দেখাক। ভোটযন্ত্রের বদলে ব্যালটে ভোট হলে ফলাফল এ রকম হবে না।’’
এর আগেও উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে ইভিএম কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল। প্রথম সেই অভিযোগ তুলেছিলেন মায়াবতীই। অন্য দিকে, গুজরাতের নির্বাচনের আগেই কংগ্রেসের মোহন প্রকাশ বলেছেন, ‘‘বিজেপির জন্য এই নির্বাচন সহজ হবে না। ইভিএম-কে কতটা বিকৃত করতে পারবে, তার ওপরেই নির্ভর করবে ওদের হার-জিত।’’ তার উত্তরে শনিবার সুরাতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছেন, ‘‘ওঁরা জানেন, হার নিশ্চিত। তাই আগে থেকেই অজুহাত সাজাচ্ছেন।’’
উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী, বিজেপির দীনেশ শর্মা ইভিএম কারচুপি নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘ইভিএমে গলদ নেই। ত্রুটি ওঁদের দলে ও মনে। তাই মানুষ আর ওঁদের সঙ্গে নেই।’’ উত্তরপ্রদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিংহ এ দিনই কলকাতায় অখিলেশের বক্তব্যের জবাবে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে আমার দেখা হলে জিজ্ঞাসা করব, হারের পরে কেমন লাগছে? ওঁরা নিজেদের গড়েও হেরেছেন। কেন এমন হল, সেটা উনি বরং উত্তরপ্রদেশের জনতা এবং সংবাদমাধ্যমের সামনে বলুন!’’