—প্রতীকী ছবি।
ভারত ও আমেরিকা অংশীদার হবে কি না, সেটা কোনও প্রশ্নই নয় বলে মনে করেন দিল্লিতে নিযুক্ত আমেরিকান সেনা অ্যাটাশে ডগলাস হেস। তাঁর মতে, দু’দেশের মধ্যে কী ধরনের অংশীদারি থাকবে সেটাই হল প্রশ্ন। তাঁর কথায়, ‘‘ঐতিহাসিক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে অভূতপূর্ব সহযোগিতা প্রয়োজন। দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরে কোয়াড ও অন্য বহুপাক্ষিক মঞ্চের অংশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমেরিকা গর্বিত।’’ কলকাতায় কার্যনির্বাহী কনসাল জেনারেল অ্যাড্রিয়ান প্র্যাটের মতে, ‘‘দু’দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলির মধ্যে সহযোগিতার ফলে জাতি-ধর্ম-লিঙ্গ-রাজনৈতিক মত নির্বিশেষে নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের সম্ভাবনা কমে, জঙ্গি হামলার বিপদ কমে ও দু’দেশকেই যুদ্ধের সম্ভাবনা থেকে রক্ষা করে।’’
এক সময়ে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে মহড়়ায় সামিল হয়েছিল আমেরিকা। ‘শত্রু’ বিমানের মোকাবিলায় ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও বিমানচালকদের দক্ষতা দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন আমেরিকান বিশেষজ্ঞেরা। তার পরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জল অনেক গড়িয়েছে। যৌথ মহড়া থেকে আমেরিকান সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে উৎপাদন, ভারত-আমেরিকা প্রতিরক্ষা সম্পর্ক অনেক দূর এগিয়েছে। শুক্রবার কলকাতায় আমেরিকান দূতাবাস, আমেরিকান কনসুলেট ও থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘কাটস ইন্টারন্যাশনাল’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ ভাবেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করলেন ভারতীয় বায়ুসেনার প্রাক্তন প্রধান অরূপ রাহা। আমেরিকার কাছ থেকে প্রিডেটর শ্রেণির ড্রোন কেনার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত ভারতীয় বাহিনীর ক্ষমতা বাড়াবে বলে মত তাঁর।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় নয়াদিল্লির সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমেরিকা চিনের কথা ভাবতে বাধ্য বলে মত কৌশলগত বিশেষজ্ঞ চিন্তামণি মহাপাত্র ও ভারতীয় সেনার প্রাক্তন উপপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুব্রত সাহার। সুব্রতের মতে, চিন কেবল সামরিক, আর্থিক দিক থেকে এগিয়েই নেই। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু পদার্থের ভাণ্ডার রয়েছে চিন ও বেজিং-ঘনিষ্ঠ কয়েকটি দেশে। ফলে তা আন্তর্জাতিক কূটনীতির ক্ষেত্রে চিনকে সুবিধেজনক অবস্থানে থাকতে সাহায্য করে। মহাপাত্রের মতে, চিনের সঙ্গে আমেরিকার বিরোধ রয়েছে ঠিকই। কিন্তু বেজিংয়ের সঙ্গে বিরোধ মেটাতেও উদ্যোগী হয়েছে ওয়াশিংটন। ফলে সুচিন্তিত ভাবেই পদক্ষেপ করতে হয় নয়াদিল্লিকে। তাঁর মতে, কৌশলগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে নমনীয়তা বজায় রাখাই বর্তমানে
নীতি হওয়া উচিত।