এনএসজি সদস্যপদ: ভারতের পাশে আমেরিকা, রুখতে মরিয়া চিন-পাক

ভারত নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপে (এনএসজি) জায়গা পাবে কি না, তা নিয়ে জোর দ্বৈরথে আমেরিকা-চিন। চিন বলছে, কিছুতেই এনএসজি-র সদস্য হতে দেওয়া হবে না ভারতকে। এনএসজির অনেকগুলি সদস্য দেশকে চিন ভারতের বিরুদ্ধে একজোট করে ফেলেছে বলেও বেজিং দাবি করেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৬ ১৮:১৯
Share:

ভারত নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপে (এনএসজি) জায়গা পাবে কি না, তা নিয়ে জোর দ্বৈরথে আমেরিকা-চিন। চিন বলছে, কিছুতেই এনএসজি-র সদস্য হতে দেওয়া হবে না ভারতকে। এনএসজির অনেকগুলি সদস্য দেশকে চিন ভারতের বিরুদ্ধে একজোট করে ফেলেছে বলেও বেজিং দাবি করেছে। পাল্টা মুখ খুলেছে আমেরিকাও। ভারতকে এনএসজির সদস্য করতে আমেরিকা যে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাবে, তা বুঝিয়ে দিয়েছে মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক।

Advertisement

গোটা বিশ্বে পরমাণু জ্বালানি এবং পরমাণু অস্ত্রশস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত সাজসরঞ্জামের আমদানি-রফতানি, এবং সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে এনএসজি। ৪৮টি দেশ এই মুহূর্তে এনএসজি’র সদস্য। যদিও বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পরমাণু শক্তিধর দেশ ভারত এখনও এনএসজির সদস্য নয়। ভারতকে সদস্য করে নেওয়ার প্রক্রিয়া সবে শুরু হয়েছে। আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান-সহ বিভিন্ন দেশ ভারতকে এনএসজির সদস্য হিসেবে চাইছে। কিন্তু পাকিস্তান ভারতের এনএসজি-যাত্রা ভেস্তে দিতে তৎপর। তাই চিনকে কাজে লাগিয়ে পাকিস্তান ভারতের পথে কাঁটা বিছিয়ে দিতে চাইছে। পাকিস্তান নিজে এনএসজির সদস্য নয়। ফলে ভারতের সদস্যপদ পাওয়া আটকানোর জন্য পাকিস্তান সরাসরি কোনও প্রভাব খাটাতে পারবে না। কিন্তু পাকিস্তানের নতুন মিত্র চিন এনএসজি সদস্য। তাই ভারতকে আটকাতে চিনের দ্বারস্থ পাকিস্তান। ইসলামাবাদের দাবি মেনে নিয়ে বেজিং প্রকাশ্যেই জানিয়েছে, ভারতকে এনএসজি-তে তারা ঢুকতে দেবে না। অনেকগুলি সদস্য দেশকে ভারতের বিরোধিতা করার জন্য তারা রাজি করিয়ে ফেলেছে বলেও চিনের তরফে জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন:

Advertisement

চিন-পাকিস্তানকে প্রবল চাপে ফেলে ইরানের ছাবাহারে বন্দর ভারতের

ভারতের হয়ে আসরে নেমেছে আমেরিকা। এনএসজির অধিকাংশ সদস্য যাতে ভারতের সদস্যপদের বিরোধিতা না করে, তার জন্য মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক তদ্বির-তদারক শুরু করেছে। পাকিস্তান যে ভাবে আমেরিকার হাত ছেড়ে ক্রমশ চিনের দিকে ঝুঁকছে, তাতে ওয়াশিংটন মোটেই খুশি নয়। চিন পাকিস্তান মৈত্রীর বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের প্রধান অস্ত্র এখন ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব। তাই যে কোনও উপায়ে ভারতকে এনএসজির সদস্য করে নিতে আমেরিকা সব রকম চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে। মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জন কার্বি শুক্রবার বলেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট ওবামা ২০১৫ সালে ভারত সফরে গিয়ে যা বলেছিলেন, আমি তা আবার মনে করিয়ে দিতে চাই। প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিম-এর সদস্য হওয়ার সব যোগ্যতা ভারতের রয়েছে এবং ভারত এখন এনএসজি-তে যোগ দিতে প্রস্তুত।’’

চিন বলছে, ভারত এখনও নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি (এনপিটি) বা পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তিতে সই করেনি। যে দেশ পরমাণু অস্ত্রের প্রসার রোধের জন্য চুক্তি সই করতে রাজি নয়, সেই দেশকে এনএসজি-তে ঢুকতে দেওয়া যাবে না।

আমেরিকার দাবি, ভারত এনপিটি সই না করলেও পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবে যথেষ্ট দায়িত্বশীল। তাই ভারতকে এনএসজির বাইরে রাখার কোনও অর্থ হয় না।

এ যাত্রায় এনএসজির সদস্যপদ পাওয়া সম্ভব হবে কি না, সে বিষয়ে ভারত এখনও নিশ্চিত নয়। কিন্তু ভারতের সদস্যপদ পাওয়াকে কেন্দ্র করে আমেরিকা-চিন যেমন প্রকাশ্য দ্বৈরথে জড়িয়েছে, তার নজির খুব একটা নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement