অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
অরবিন্দ কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে ফের মন্তব্য করল আমেরিকা। বুধবারই আমেরিকার বিদেশ দফতরের এই সংক্রান্ত মন্তব্যে ‘অসন্তুষ্ট’ ভারতের বিদেশ মন্ত্রক তলব করেছিল সে দেশের এক শীর্ষ কূটনীতিককে। তবে তার পরেও নিজেদের বক্তব্য অনড় রইল জো বাইডেন প্রশাসন। এ বার শুধু দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারি নিয়েই মন্তব্য করল না তারা, সঙ্গে জুড়ল দেশের বিরোধী দল কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ়’ হওয়ার প্রসঙ্গও।
বুধবার আমেরিকার কূটনীতিককে বিদেশ মন্ত্রকের তলব করা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় সে দেশের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারকে। সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে নিজেদের পুরনো বক্তব্য আরও এক বার তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “আমেরিকা এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছ এবং অবাধ আইনি প্রক্রিয়ার দাবি জানায়।” তার পরই ওই মুখপাত্রকে কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ়’ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, “আয়কর দফতরের বিরুদ্ধে কংগ্রেস তাদের বেশ কিছু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ় করে দেওয়ার যে অভিযোগ তুলেছে, সে সম্পর্কেও আমরা অবহিত রয়েছি। কংগ্রেসের দাবি, এর ফলে আসন্ন নির্বাচনের জন্য প্রচার চালাতে তাদের অসুবিধার মুখে পড়তে হবে।”
তবে কূটনৈতিক বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র। তিনি জানান, তাঁরা সর্বদাই স্বচ্ছ এবং নির্দিষ্ট সময়সীমায় বাঁধা আইনি প্রক্রিয়াকে উৎসাহ দেবেন।
সম্প্রতি আমেরিকার বিদেশ দফতরের তরফে বলা হয়, তারা কেজরীওয়ালের গ্রেফতারির বিষয়ে নজর রাখছে। একই সঙ্গে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষেত্রে ‘স্বচ্ছ, অবাধ আইনি প্রক্রিয়া’র জন্য নয়াদিল্লির কাছে আর্জি জানায় ওয়াশিংটন। তার পরেই বুধবার ভারতে অবস্থিত আমেরিকার দূতাবাসের কার্যকরী সহকারী প্রধান গ্লোরিয়া বারবেনাকে তলব করা হয়। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে ভারতের আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্রের করা মন্তব্যের নিন্দা করা হয়। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “কূটনীতিতে আশা করা হয় যে, দেশগুলি অন্য দেশের সার্বভৌমত্ব এবং অভ্যন্তরীণ অখণ্ডতার বিষয়ে শ্রদ্ধাশীল হবে। অন্যথায় খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি হবে।”
এর আগে কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে মন্তব্য করার জন্য ভারতের জার্মান দূতাবাসের উচ্চপদস্থ কূটনীতিক জর্জ এনজ়ওয়েলারকে তলব করেছিল বিদেশ মন্ত্রক। জার্মানির তরফেও কেজরীর গ্রেফতারি নিয়ে মন্তব্য করে বলা হয়েছিল, তারা আশা করে ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা’ এবং ‘মৌলিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ’ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বিচার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রেও প্রযুক্ত হবে। তবে তাঁর এই মন্তব্য ভাল ভাবে নেয়নি নয়াদিল্লি। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জার্মান রাষ্ট্রদূতের কেজরীওয়াল সংক্রান্ত মন্তব্যকে ‘দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ’ হিসাবে দেখেছে।