প্রতীকী চিত্র।
প্রভাব এবং ক্ষমতা হাতছাড়া হতে দেওয়া যাবে না কিছুতেই। কোভিড সংক্রমণের আশঙ্কা থাকলেই বা কী!
করোনা আক্রান্ত এক দম্পতি দিব্যি আর সকলের সঙ্গে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করলেন। সম্মেলনে তাঁদের ভোট পেয়ে কমিটির সম্পাদক পুনর্নির্বাচিত হলেন। তার পরে কোভিড পজ়িটিভের কথা জানাজানি হতে নিভৃতবাসের আড়াল নিতে হল সম্মেলন শুদ্ধু সবাইকে!
কলকাতায় পুজোর ভিড়ে নতুন করে করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বগামী হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে যখন চর্চা চলছে, তখনই এমন আজব ঘটনা ঘটে গেল দক্ষিণের কেরলে। সে রাজ্যে অতিমারির সংক্রমণের হার ওঠা-নামা করে চলেছে নানা সময়ে। এরই মধ্যে পালাক্কাড জেলায় সিপিএমের একটি শাখা সম্মেলনের ঘটনার পরে ফের নড়েচড়ে বসতে হয়েছে শাসক দলের নেতৃত্ব এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকে। কোভিড নিয়েই সম্মেলনে যোগ দেওয়া দু’জন এবং সেখানে থাকা বাকিদের কারওরই অবশ্য এখনও পর্যন্ত গুরুতর অসুস্থতার খবর নেই। তবে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ’ নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।
দক্ষিণী রাজ্যের শাসক দল সূত্রের খবর, সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে ওই শাখার সদস্য এক দম্পতির কোভিড পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছিল। তাঁরা সামাজিক মাধ্যমে সে কথা জানিয়েও ছিলেন বলে ওই দুই সদস্যের দাবি। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমের সেই পোস্ট সম্মেলনের প্রতিনিধিরা কেউ নজর করেননি। ঘটনার ময়না তদন্তে উঠে এসেছে, শাখা কমিটির সম্পাদক এস কৃষ্ণদাস ওই দম্পতিকে বলেন, তাঁরা যখন তেমন অসুস্থ নন, তা হলে সম্মেলনে চলে আসুন। কারণ, ভোটাভুটি হলে ক্ষমতাসীন শিবিরের জন্য তাঁদের সমর্থন জরুরি হয়ে উঠতে পারে। কার্যক্ষেত্রে ঘটনা গড়ায়ও সে দিকে। সম্মেলনের শেষ পর্বে ভোটাভুটি হয় এবং কৃষ্ণদাসই ফের সম্পাদক নির্বাচিত হন। সেই জয়ে অবদান ছিল ওই দম্পতির!
সম্মেলনে সিপিএমের পুতুসেরি এরিয়া কমিটির তরফে পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একটি লোকাল কমিটির সম্পাদক এ রাগেশ এবং জেলা পঞ্চায়েতের সভাপতি কে বিনুমল। সম্মেলনের পরে বিষয়টি তাঁদের নজরে আসার পরেই দুই পর্যবেক্ষক এবং শাখার ১৪ জন মিলে মোট ১৬ জন নিভৃতবাসে গিয়েছেন। খবর দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের স্থানীয় ইউনিটকেও। রাগেশ দলকে রিপোর্ট দিয়েছেন, কোভিড পজ়িটভ থাকা কেউ সম্মেলনে থাকবেন, তাঁদের ধারণাতেই ছিল না!
সিপিএমের সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী, সম্মেলনে প্রতিনিধিদের নিজেদের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানিয়ে ফর্ম পূরণ করতে হয়। যাকে বলে ‘ক্রিডেনশিয়াল্স রিপোর্ট’। কিন্তু সেখানে কোভিড পজ়িটিভ বা নেগেটিভ রিপোর্ট রাখার কথা কেউই ভাবেনি! কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘ওখানে প্রায় সকলেরই একটা বা দু’টো করে টিকা নেওয়া রয়েছে। কিন্তু এমন কাজ একেবারেই দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় নয়! এর পরে লোকাল সম্মেলন শুরু হচ্ছে। কোভিড সতর্কতার কথা আবার প্রতিটা জেলাকে বলে দিতে হবে!’’