ধনীরাও কেন ভর্তুকি দেওয়া রান্নার গ্যাস ব্যবহার করবে—এই প্রশ্ন তুলে উচ্চবিত্তদের স্বেচ্ছায় ভর্তুকি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সেই অনুরোধ যে কাজ করতে শুরু করেছে, বিদেশের মাটিতে সেই দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্যারিসে অনাবাসী ভারতীয়দের একটি সভায় মোদী জানিয়েছেন, ভারতে এখনও পর্যন্ত সাড়ে তিন লক্ষ্য উচ্চবিত্ত মানুষ রান্নার গ্যাসে সরকারি ভর্তুকি না নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, এর ফলে যে টাকা সাশ্রয় হবে, সেটা সরাসরি গরীব মানুষের জন্য ব্যবহার করা হবে। ‘যারা আজও কাঠ দিয়ে রান্না করেন, এই টাকা তাদের ভর্তুকি দেওয়া হবে’’—জানিয়েছেন মোদী। তাঁর মতে, গরীব মানুষ যদি কাঠ দিয়ে রান্না করেন, তা হলে গাছ কাটবেনই তাঁরা। এদের কাছে ভর্তুকির রান্নার গ্যাস পৌঁছে দেওয়া হলে পরিবেশও রক্ষা পাবে।
তবে ভারতে এলপিজি সংযোগ রয়েছে ১৫ কোটির বেশি। মোদীর দাবি অনুযায়ী সাড়ে তিন লক্ষ উচ্চবিত্ত মানুষ ভর্তুকি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও, এই সংখ্যা এখনও অনেক কম বলেই মনে করছে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। তারা চাইছে এটা অন্তত এক কোটি হোক। সচ্ছলরা যাতে নিজে থেকেই ভর্তুকি ছেড়ে দেন, সেই চেষ্টা যেমন তিনি করছেন, তেমনি ভারতের অর্থনীতিতে আঞ্চলিক অসাম্য দূর করারও চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মোদী। তাঁর মন্তব্য, ‘‘দেশের পূর্বাঞ্চলে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যগুলি পিছিয়ে রয়েছে। এই এলাকার উন্নয়ন ঘটাতেই হবে।’’
এনডিএ সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরার পাশাপাশি পূর্বতন ইউপিএ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের সমালোচনাও করেছেন মোদী। মনমোহন সিংহ সরকার যে ভাবে কয়লার ব্লক বণ্টন করেছে, তা নিয়ে মোদীর মন্তব্য, ‘‘আপনাদের কাছে কেউ কলম কিংবা রুমাল চাইলে যে ভাবে সেগুলি দিয়ে দেন, ইউপিএ সরকার সে ভাবেই কয়লার ব্লক দিয়ে দিয়েছে।’’ মোদীর ব্যাখ্যা,‘‘এ নিয়ে পরে ঝড় ওঠে। সুপ্রিম কোর্ট কয়লা খনির বণ্টন বাতিল করে দেয়। এতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নামও উঠে এসেছে। এ আমি যদিও এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’’
দু’দিনের ফ্রান্স সফর শেষ করে মোদী আজই জার্মানীতে পৌঁছে গিয়েছেন। সেখানে হ্যানোভারের শিল্পমেলায় যোগ দিয়ে ভারতে বিনিয়োগ টানাই লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রীর। এই মেলায় প্রায় ৪০০টি ভারতীয় সংস্থা যোগ দিচ্ছে। শিল্পমেলার ভারত সহযোগী দেশ। এ দিনই জার্মান শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।