পাচার, গণধর্ষণ, গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা। অলঙ্করণে তিয়াসা দাস।
বিক্রি করে দিয়েছিল বাবা। বিক্রি হয়ে দিনের পর দিন যৌন নির্যাতনের শিকার। পরিত্রাণের আশায় পুলিশের কাছে গিয়েও লাভ হয়নি। ফিরতে হয়েছিল খালি হাতে। অত্যাচারে বিদ্ধ হতে হতে বাধ্য হয়ে গত মাসে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল সে। পুড়ে গিয়েছিল শরীরের ৮০ শতাংশ। সেই অবস্থায় হাসপাতালে দিন পনেরো লড়াইয়ের পর মৃত্যু হল উত্তরপ্রদেশের বছর কুড়ির সেই বিধবা মহিলার।
ঘটনাটি ঘটেছিল উত্তরপ্রদেশের হাপুর এলাকায়। বছর কুড়ির ওই বিধবা মহিলার জীবন সে দিনই অন্ধকার নেমে এসেছিল যে দিন তাঁর বাবা তাঁকে মাত্র ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। পরিবারের ধার শোধ করার জন্যই তাকে নাকি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এর পর বিক্রি হয়ে যাওয়া সেই ব্যক্তি ও তাঁর বন্ধুর হাতে দিনের পর দিন ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তিনি।
সেই ব্যক্তির হাত থেকে জীবনকে মুক্ত করতে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই সময় ওই অত্যাচারিত মহিলার এফআইআর না নিয়ে তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিল পুলিশ। তারপরই গত ২৮ এপ্রিল গায়ে আগুন দিয়ে জীবন শেষ করে দেওয়ার পথ বেছে নেন ওই মহিলা।
আর এই ঘটনার পরই গোটা বিষয়টি সামনে আসে। দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার বিষয়টি নিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যানাথকে চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে হাপুর পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার জন্য তরুণীর ক্ষতির ক্ষতিপূরণের দাবিও করা হয়। অবশেষে ১৪ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করে হাপুর পুলিশ।
তবে তা আর দেখে যেতে পারলেন না ওই মহিলা। অত্যাচারে জীবন ওষ্ঠাগত হওয়ার পর হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে লড়তে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন তিনি।