উত্তরপ্রদেশের পুলিশের ডিএসপি শ্রেষ্ঠা ঠাকুর। — ফাইল চিত্র।
প্রতারকদের প্রতারণার জালে প্রায়ই আটকে পড়েন সাধারণ মানুষ। কিন্তু এ বার খোদ এক পুলিশ অফিসারই প্রতারিত হলেন। শুধু তা-ই নয়, খোয়ালেন লক্ষাধিক টাকাও। জানা গিয়েছে, ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস (আইআরএস) অফিসারকে বিয়ে করেছিলেন ওই পুলিশ অফিসার। তবে বিয়ের পর জানতে পারেন, তাঁর স্বামী পরিচয় ভাঁড়িয়েছেন। জানা মাত্রই ভুয়ো আইআরএস অফিসারকে বিবাহবিচ্ছেদ দেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশের পুলিশের ডিএসপি শ্রেষ্ঠা ঠাকুরকে চেনেন অনেকেই। ‘লেডি সিংহম’ নামে পরিচিত তিনি। তাঁর ভয়ে কাঁপেন অপরাধীরাও। তাঁর ভয়ডরহীন মনোভাবকে কুর্নিশ জানান সকলে। সেই ‘ডাকাবুকো’ পুলিশ অফিসারই বৈবাহিক প্রতারণার শিকার হলেন।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ২০১৮ সালে একটি বিবাহ সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে রোহিত রাজ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হয় শ্রেষ্ঠার। রোহিত নিজেকে আইআরএস অফিসার হিসাবে পরিচয় দেন। তাঁর স্বভাব এবং বুদ্ধিমত্তায় মোহিত হন শ্রেষ্ঠা। ঠিক করেন রোহিতের সঙ্গেই বাকি জীবন কাটাবেন। ধুমধাম করে বিয়েও তাঁদের। কিন্তু তার পরই শ্রেষ্ঠার জীবনের গল্প একে বারে অন্য দিকে বইতে শুরু করে।
শ্রেষ্ঠা জানতে পারেন, তাঁর স্বামী আইআরএস অফিসার নন। তার পরই শ্রেষ্ঠার বৈবাহিক জীবনে তিক্ততা শুরু। স্বামীর সংসার ছেড়ে বাপের বাড়ি ফিরে আসেন। শুরু হয় বিবাহবিচ্ছেদ মামলা। সেই সঙ্গে রোহিতের নামে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন শ্রেষ্ঠা।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে শ্রেষ্ঠা একা নন, আরও অনেকেই রোহিতের দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন। এ ভাবেই ভুয়ো পরিচয় দিয়ে অন্যদের থেকে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। গাজিয়াবাদে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রুজু হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে শ্রেষ্ঠা সফল ভাবে আইপিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তার পর শুরু করেন পুলিশের চাকরি। অতীতে অনেক বার তাঁর নাম সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছে। রাজ্যের শাসকদলের ‘দাদাগিরি’র বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। যার জন্য বদলিও হতে হয়। তবে এত কিছুর পরেও দমে যাননি। নিজের কর্তব্যে অবিচল থেকেছেন। সেই অফিসার এমন ভাবে প্রতারিত হয়েছেন, তা বিশ্বাসই করতে পারছেন না তাঁর সহকর্মীরা।