নীতীশ কুমার (বাঁ দিকে) এবং তেজস্বী যাদব। —ফাইল চিত্র।
বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ ছেড়ে দু’সপ্তাহ আগেই এনডিএ শিবিরে শামিল হয়েছিলেন নীতীশ কুমার। সোমবার বিহার বিধানসভায় আস্থাভোটের সম্মুখীন হতে চলেছেন তিনি। বিধায়ক সংখ্যার নিরিখে অনায়াসেই এই শক্তিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার কথা নীতীশের। তবে জয় করেও ভয় যাচ্ছে না বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর।
রবিবার রাত থেকেই শোনা যাচ্ছিল, শাসকজোটের ৮ বিধায়কের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। পরে পাঁচ জেডিইউ বিধায়কের মধ্যে চার জনের খোঁজ পাওয়া যায়। যোগাযোগ করা সম্ভব হয় ‘নিখোঁজ’ তিন বিজেপি বিধায়কের সঙ্গেও। তবে এক জেডিইউ বিধায়কের এখনও সন্ধান মেলেনি বলে জানা গিয়েছে।
শাসকশিবিরে যখন আশঙ্কার দোলাচল, তখন বিরোধী আরজেডি এবং কংগ্রেস বিধায়কেরা প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা লালু-পুত্র তেজস্বী যাদবের বাসভবনে জড়ো হয়েছেন। সোমবার সকালেই সেখানে পৌঁছেছেন লালু-পত্নী রাবড়ী দেবী। তেজস্বীর বাসভবনের সামনে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তার এই ‘কড়াকড়ি’ দেখে আরজেডির দাবি, তাদের বিধায়কদের গৃহবন্দি করার চেষ্টা করছে নীতীশ সরকার।
এনডিএ-র তরফে বলা হয়েছে, নীতীশের জয়ের ব্যাপারে কোনও সংশয় নেই। বিহারের শাসকজোট সূত্রের খবর, সোমবার বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের পরেই স্পিকার তথা আরজেডি বিধায়ক আওয়াধ বিহারি চৌধরিকে সরানোর জন্য প্রস্তাব আনবে তারা। তার পর শুরু হবে ভোটাভুটি। ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন ১২২টি আসন। নীতীশের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই রয়েছেন ১২৮ জন বিধায়ক। নীতীশকে স্বস্তি দিয়ে এনডিএ-র শরিক দল জিতনরাম মাঝির হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা (হাম) জানিয়েছে, তাদের চার জন বিধায়কই সোমবার নীতীশের পক্ষে ভোট দেবেন। মাঝে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল যে, শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত বদল করতে পারেন জিতনরাম। তবে রবিবার সেই জল্পনা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে হামের তরফে।
অন্য দিকে, বিরোধী শিবিরের হাতে রয়েছে ১১৪টি ভোট। আরজেডি, কংগ্রেস ছাড়াও বিরোধী শিবিরে রয়েছে তিন বাম দল সিপিআই, সিপিএম এবং সিপিআই(এমএল)। রাজ্যের একটি বিধায়ক রয়েছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল মিমের। তাঁর অবস্থান এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। মনে করা হচ্ছে যে, তিনি ভোটদানে বিরত থাকবেন। তবে সোমবার নীতীশের শিবির থেকে বিধায়ক ভাঙিয়ে বিরোধীরা চমক দেখায় কি না, কিংবা বিহার বিধানসভায় কোনও নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয় কি না, সে দিকে নজর থাকবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ জানুয়ারি আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গ ত্যাগ করে আরও এক বার বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ শিবিরে শামিল হন নীতীশ। ওই দিন সকালেই ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিকেলেই এনডিএ-র মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন তিনি।