সীমা হায়দর এবং তাঁর স্বামী সচিন মীণা। ছবি: সংগৃহীত।
সীমা হায়দরের সঙ্গে পাকিস্তান সেনা যোগ রয়েছে? অন্তত তেমনই দাবি করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এটিএস। সীমা কি তা হলে কোনও গুপ্তচর? এই প্রশ্নও ক্রমে জোরালো হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ এটিএস পাকিস্তানের বাসিন্দা সীমাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে গোপন ডেরায় রেখে জেরা করছে। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসএআইয়ের সঙ্গে সীমার কোনও যোগ রয়েছে কি না, সে বিষয়ে জেরা করা হতে পারে সীমাকে।
সোমবার থেকেই ‘নিখোঁজ’ হয়ে গিয়েছিলেন সীমা এবং তাঁর বর্তমান স্বামী নয়ডার রবুপুরার সচিন মীণা। কিন্তু পরে জানা যায়, ‘নিখোঁজ’ নন, সীমা এবং সচিনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে উত্তরপ্রদেশে এটিএস। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত সীমাকে জেরা করে জানা গিয়েছে, তাঁর কাকা পাকিস্তান সেনার সুবেদার ছিলেন। ভাই পাক সেনায় কর্মরত। ফলে ‘চরবৃত্তির’ প্রসঙ্গ আরও জোরালো হতে শুরু করেছে।
সীমার পাসপোর্ট, মোবাইল ফোনের তথ্য, এ ছাড়াও হাই কমিশন দফতরে সীমার পরিচয়পত্র পাঠিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। সোমবার সীমাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় এটিএস। তার পর থেকেই খবর চাউর হয়, সীমা ‘নিখোঁজ’। রাত ১২টা পর্যন্ত জেরা করার পর রবুপুরার বাড়িতে ছেড়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে আবার এটিএস পৌঁছে সীমা, তাঁর স্বামী সচিন এবং তাঁর বাবাকে জেরার জন্য নিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, সীমা সত্যি কথা বলছেন কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য পলিগ্রাফ পরীক্ষারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
পুলিশের একটি সূত্র আবার বলছে, ভিসা ছাড়া ভারতে ঢোকায় সীমাকে গ্রেফতারও করা হতে পারে। নেপাল সীমান্ত দিয়ে কী ভাবে গ্রেটার নয়ডায় কোনও রকম বাধা ছাড়াই ঢুকে পড়লেন সীমা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেন ওই সময় তাঁর কোনও নথি পরীক্ষা করা হল না, কোথায় খামতি ছিল, সব নজরে আনা হচ্ছে। শুধু উত্তরপ্রদেশ এটিএস-ই নয়, দেশের বাকি তদন্তকারী সংস্থারও জেরার মুখে বসতে হতে পারে সীমাকে। তাঁর হোয়াট্সঅ্যাপ কথোপকথন এবং ফোন কল ডিটেলও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
বেশ কয়েকটি প্রশ্ন ভাবাচ্ছে উত্তরপ্রদেশের এটিএস এবং গোয়েন্দাদের। কেন অবৈধ ভাবে ভারতে ঢুকলেন সীমা? তাঁর কাছে বেআইনি নথি কী ভাবে এল? এই প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজতে সচিন, তাঁর বাবা নেত্রপালের মুখোমুখি বসিয়ে সীমাকে জেরা করার প্রস্তুতি চলছে।
অন্য দিকে, সীমাকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলে বার বার হুমকি আসছে। মুম্বই পুলিশের কাছে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, সীমাকে পাকিস্তানে না ফেরালে আবার ২৬/১১-র মতো হামলা হতে পারে। মঙ্গলবারও মুম্বই পুলিশকে আবার একই হুমকি দেওয়া হয়। সীমার ঘটনা নিয়ে পাকিস্তানের রাজনীতিও উত্তাল। সে দেশের সিন্ধ প্রদেশের বিধানসভায় সীমার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। বিধানসভায় জোর চর্চা হয় এই ঘটনা নিয়ে। শুধু তাই-ই নয়, এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী জ্ঞানচাঁজ ইসরানির অভিযোগ, পাকিস্তানের বদনাম করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ভারত এই ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ তাঁর।