সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-র নেতা অখিলেশ সিংহ যাদব। ফাইল চিত্র।
সন্ন্যাসী অত্যধিক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাতে শেষ পর্যন্ত গাজন যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্য সতর্ক থাকতে হচ্ছে সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-র নেতা অখিলেশ সিংহ যাদবকে। বিষয়টি তাঁর কাছে চ্যালেঞ্জও। বুধবার সাত শরিক দলের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের আসন সমঝোতা নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন তিনি। দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, খুব শীঘ্রই তাদের প্রার্থী তালিকার প্রথম কিস্তি প্রকাশিত হবে।
এসপি সূত্রের বক্তব্য, সমস্যা শুধু শরিক দলগুলিকে নিয়েই নয়। ভাবতে হচ্ছে নবাগত ও যাঁরা আসতে চলেছেন— তাঁদের কথাও। গত কয়েক সপ্তাহে বিএসপি, কংগ্রেস এবং বিজেপি থেকে বহু ছোট-বড় নেতা এসপি-তে যোগ দিয়েছেন। যোগ দেওয়ার কথা যোগী আদিত্যনাথ সরকারের দুই মন্ত্রীরও। তাঁরা এলে একা আসবেন না, সঙ্গে নিয়ে আসবেন আরও কিছু বিধায়ক ও নেতাকে। যাঁরা এসেছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রবীণ নেতারাও। অখিলেশের সমস্যা হল, নবাগতদের সন্তোষজনক আসন দেওয়া, শরিকদের মনে ক্ষোভ তৈরি হতে না দেওয়া, সর্বোপরি নিজের দলের বিপুল সংখ্যক টিকিট প্রত্যাশীকে ভোটে লড়ার জায়গা করে দেওয়া। সে ক্ষেত্রে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাঁকে কড়া সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলেই মনে করছে এসপি শিবির।
এই মুহূর্তে এসপি-র শরিকরা হল, রাষ্ট্রীয় লোকদল (আরএলডি), মহান দল, জনবাদী পার্টি (সমাজবাদী), আপনা দল, সুহেলদেব ভারতীয় সমাজ পাটি, শিবপাল যাদবের প্রগতিশীল সমাজবাদী পার্টি, গন্ডোয়ানা গণতন্ত্র পার্টি। বুধবার এই দলগুলির নেতাদের সঙ্গে অখিলেশ বৈঠকে বসেন। মহান দলের প্রধান কেশব মৌর্য বৈঠকের পর বলেন, “প্রত্যেকটি দলের প্রার্থীরা নিজেদের প্রতীকে লড়তে পারেন, অথবা চাইলে সমাজবাদী পার্টির প্রতীকও নিতে পারেন। যেখানে যেটা শক্তিশালী বলে মনে হবে। শুধু একটি বিষয়েই অখিলেশ সাফ বার্তা দিয়েছেন, কোনও আসন যেন নষ্ট না হয়।”
প্রতীক নিয়ে কোনও সমস্যা নেই ছোট দলগুলির। কিন্তু সংখ্যা নিয়ে রয়েছে। জনবাদী পার্টির (সমাজবাদী) নেতা সঞ্জয় চহ্বাণ বলছেন, “আমরা ১০টি আসন চেয়ে তালিকা জমা দিয়েছি। এ বার দেখা যাক ক’টা মেলে।”
বিজেপির মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে এসপি-তে যোগ দিতে চলেছেন স্বামী প্রসাদ মৌর্য। তিনি যোগ দিলে সবার আগে অস্বস্তিতে পড়বেন উঁচাহার নির্বাচনী কেন্দ্রের বর্তমান এসপি বিধায়ক মনোজ পাণ্ডে। কারণ, এই আসনটি নিজের ছেলের জন্য অবধারিত ভাবে চাইবেন স্বামী প্রসাদ। ২০১৭-র বিধানসভা ভোটে বিজেপির হয়ে এই আসন থেকে দাঁড়িয়ে হেরে গিয়েছিলেন স্বামী প্রসাদের পুত্র উৎকৃষ্ট মৌ্র্য। সে ক্ষেত্রে মনোজ পাণ্ডেকে ফাজিলনগরে টিকিট দেওয়া হতে পারে বলে কথা চলছে। কিন্তু সেই ফাজিলগনরেরই টিকিট দেওয়া হবে— এই শর্তে বছরের গোড়ায় বিজেপি থেকে আরএলডি-তে যোগ দিয়েছিলেন রামাশিস রাই।
রাজনীতির লোকজনের মতে, এগুলি সম্ভাব্য জটিলতার এক-আধটা উদাহরণ মাত্র। এ রকম বহু আসন নিয়েই বাছাইয়ের সমস্যায় পড়তে হবে এসপি নেতৃত্বকে। এই নিয়ে দল বা এসপি জোটের অভ্যন্তরে অসন্তোষ বা গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জেরে বিজেপির বাড়তি সুবিধা না হয়ে যায়, এখন সে দিকেই নজর রাখছেন অখিলেশ।