ছবি: সংগৃহীত।
তৃতীয় বড়ো চুক্তির পরে বড়োল্যান্ড আন্দোলন, নাশকতা বন্ধ হয়েছে বলে ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ফের শুরু হল বড়োল্যান্ডের জন্য আন্দোলন। অন্য দিকে বিটিসি নির্বাচন ও আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে সম্ভবত বিজেপি-বিপিএফের জোটও ভেঙে যেতে চলেছে। সব মিলিয়ে বড়োভূমিতে স্থায়ী রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতাবস্থা এখনও দূর অস্ত্।
পৃথক বড়োল্যান্ডের দাবিতে পাঁচ দশক ধরে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন বড়োরা। ২৭ জানুয়ারি এনডিএফবির সব পক্ষ, বড়োভূমির শাসক দল বিপিএফ, ছাত্র সংগঠন আবসু-সহ সকলকে নিয়ে দিল্লিতে শান্তি চুক্তি হওয়ার পরে বলা হয়, পৃথক রাজ্যের দাবি চিরকালের জন্য ত্যাগ করেছেন বড়োরা। হাতে হাত মিলিয়ে বড়োভূমির উন্নয়নের জন্য লড়বেন।
কিন্তু, করোনায় বিটিসি নির্বাচন পিছিয়ে সেখানে রাজ্যপালের শাসন জারি হতেই তাল কাটে। বিজেপির জোট শরিক বিপিএফ প্রধান হাগ্রামা মহিলারি জানান, তিনি বড়ো চুক্তি মানছেন না। চুক্তি অসার, অর্থহীন।বিটিসির নাম বদলে গত মাসেই আনুষ্ঠানিক ভাবে বড়ো টেরিটরিয়াল রিজিয়ন বা বিটিআর করা হয়েছে। সেই সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ঘোষণা হয়েছে, বড়োভূমিতে থাকা অবড়ো অধ্যুষিত গ্রামগুলি চাইলে বিটিআরের বাইরে থাকার আবেদন জানাতে পারে। এই সব নিয়েই চলছে অশান্তি। বড়োভূমিতে অবড়ো সাংসদ নব শরণিয়া বনাম বিপিএফের লড়াইও তুঙ্গে। আবার আবসুর সঙ্গে কাজিয়া চলছে বিপিএফেরও।
এর মধ্যেই প্রাক্তন সাংসদ সানসুমা খুংগুর বিসমুতিয়ারি বৃহস্পতিবার ‘অল ইন্ডিয়া বড়ো পার্টি ন্যাশনাল লিগ’ নামে নতুন দল গঠন করে ঘোষণা করেছেন, পৃথক বড়ো রাজ্যের দাবিতে তাদের আন্দোলন নতুন করে শুরু হল। বড়ো চুক্তি তাঁরা মানছেন না। তিনি বলেন, “এই চুক্তি বড়োদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। চুক্তিতে বড়োভূমির এলাকা কমে যাবে। বড়োরা সেই অর্থে প্রকৃত স্বশাসনও পাবে না।”
ডিসেম্বরে বিটিসি নির্বাচন হবে বলে মোটামুটি সিদ্ধান্ত পাকা। জোট শরিক হলেও বিজেপি জানিয়েছে, তারা বড়োভূমিতে ৪০টির মধ্যে ২৬টি আসনে প্রার্থী দেবে। এতে বিপিএফ আরও ক্ষিপ্ত। তারা জানায়, এখনও জোটের অংশ। কিন্তু বিজেপিই প্রথমে জোটধর্মবিরোধী কাজ করল। তাই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তারা আর বিজেপিকে সমর্থন দেবে কি না, তা নিশ্চিত নয়। বর্তমান সরকারে বিপিএফের ১২ জন বিধায়ক ও ৩ জন মন্ত্রী আছেন। বিপিএফ এর আগে কংগ্রেসের জোট শরিক ছিল। হাগ্রামার মতে, রাজ্যে সরকার গড়তে তাদের সাহায্য লাগবেই। বড়োভূমি ধরে রাখতে, বড়োদের স্বার্থে তারা অন্যদেরও হাত ধরতে তৈরি।
কংগ্রেস ইতিমধ্যেই বিজেপি বিরোধী মহাজোটের ডাক দিয়েছে। বিপিএফের সাধারণ সম্পাদক প্রবীণ বড়ো বলেন, “দুই শরিকে প্রচুর মতান্তরের জায়গা তৈরি হয়েছে। অন্য দল আমাদের হাত ধরতে চাইলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।” তিনি জানান, ২০২১ সালের নির্বাচনে দল বড়োভূমির বাইরেও ২০-২৬টি আসনে প্রার্থী দেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।