কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি টিকটকের প্রশাংসা করেছিলেন।
কংগ্রেস নাকি বিজেপি— কে চিনের দিকে বেশি ঝুঁকে, এই প্রশ্নে যখন শাসক বিরোধী তরজা তুঙ্গে, তার মধ্যেই হাতে নতুন অস্ত্র পেয়ে গেল বিরোধীরা। টিকটকের সঙ্গে ৫৯টি চিনা অ্যাপ নিষিদ্ধ হয়েছে ভারতে। অথচ কিছু দিন আগেও সেই টিকটককেই ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। টিকটক ভারতকে ৪ লক্ষ পিপিই কিট দেওয়ার পর। টিকটক বন্ধ হওয়ার পর সেই ভিডিয়ো ফের সামনে চলে আসায় অস্বস্তিতে শাসক শিবির। সরব তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও।
কয়েক সপ্তাহ আগের ওই ভিডিয়োতে স্মৃতি ইরানি ধন্যবাদ দিয়েছিলেন টিকটকের ভারতের সিইও নিখিল গাঁধীকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও বস্ত্রমন্ত্রকের সঙ্গে সমন্বয় করে ভারতকে ৪ লক্ষ পিপিই কিট দেওয়ার জন্য টিকটক ইন্ডিয়ার সিইও নিখিল গাঁধী ও তাঁর দলকে ধন্যবাদ।’’ ওই পিপিইগুলি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এবং ভারতীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের গাইডলাইন মেনেই তৈরি হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেছিলেন স্মৃতি ইরানি।
মঙ্গলবারই ভারতে টিকটক নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। তার সঙ্গে শেয়ারইট, বিগো ভিডিয়ো, ইউসি ব্রাউজারের মতো আরও ৫৮টি অ্যাপও ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পরেই ফের সামনে চলে এসেছে স্মৃতি ইরানির ওই ভিডিয়ো। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। স্মৃতি ইরানির ওই ভিডিয়ো-সহ একটি টুইটার পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘‘দেখুন ভারতের নিষিদ্ধ হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগেই একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিনের সংস্থার বিজ্ঞাপন করছেন। আমরা কি ওই পিপিই কিটের জন্য লালায়িত ছিলাম? ওই পোস্টেই পিএম কেয়ার্স ফান্ড নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ।
তবে রাজ্যের তৃণমূল সাংসদের তোলা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন বিজেপির এ রাজ্যের নেতা তথা দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দুর্নীতিতে ভরসা আছে তৃণমূলের, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উপরে নেই। টিকটকের মতো ৫৯টি নিষিদ্ধ চিনা অ্যাপ নিয়ে কথা বলছে তৃণমূল। একটা সময় ছিল যখন চিন থেকে পিপিই, টেস্টিং কিট, ভেন্টিলেটর— সব আনা হত। কিন্তু এখন সেগুলি ভারতেই তৈরি হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: ‘কৃত্রিম বাধা’ ভারতেরই ক্ষতি করবে, পাল্টা প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি চিনের
আরও পড়ুন: ইতিহাস সাক্ষী, মুছে যায় বিস্তারবাদীরা: লাদাখে দাঁড়িয়ে চিনকে বার্তা মোদীর
রাজীব গাঁধী ফাউন্ডেশনে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা অর্থসাহায্য করেছিল বলে অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। তার জবাবে কংগ্রেস আবার পিএম কেয়ার্স ফান্ড নিয়ে পাল্টা তোপ দেগে বলেছিল, চিনের বহু সংস্থা থেকে পিএম কেয়ার্স ফান্ডে অর্থসাহায্য করেছে। সেই তরজার মধ্যেই চিনা অ্যাপগুলি নিষিদ্ধ করে দেয় কেন্দ্র। তার পর আবার এই নয়া বিতর্কের জেরে সরগরম শাসক-বিরোধী তরজা।