চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন। —ফাইল চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডের আবহেই এ বার হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে সব রাজ্যকে চিঠি পাঠাল কেন্দ্র। ২২ অগস্ট আরজি কর মামলার শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছিলেন, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের শারীরিক ও মানসিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতে প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যসচিব ও পুলিশের ডিজিকে চিঠি পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। চিঠিতে ১০টি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।
রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রের পরামর্শ, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত আইন ও তা ভাঙলে কী শাস্তি সে বিষয়ে প্রত্যেক হাসপাতাল চত্বরে স্পষ্ট করে লিখে রাখতে হবে। ইংরেজি ও স্থানীয় ভাষায় তা লেখা থাকতে হবে। সিনিয়র ডাক্তার ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে হাসপাতাল নিরাপত্তা ও হিংসা রুখতে কমিটি গঠন করতে হবে। হাসপাতালের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে সেই কমিটি। হাসপাতালের নির্দিষ্ট কিছু অংশে রোগীর আত্মীয় ও অন্যান্য সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং এর জন্য ‘ভিজ়িটর পাস’ সংক্রান্ত নীতি আরও কঠোর করতে হবে। রাতের ডিউটি থাকাকালীন রেসিডেন্ট ডাক্তার ও নার্সরা যাতে হাসপাতাল চত্বরে একটি ভবন থেকে অন্য ভবনে বা হস্টলে নিরাপদে যাতায়াত করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।
এর পাশাপাশি হাসপাতাল চত্বরে যাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকে, যাতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে নিয়মিত টহলদারি চালায় সেগুলির দিকেও নজর দিতে বলা হয়েছে। হাসপাতালের সব সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিকঠাক কাজ করছে কি না, সেটিও দেখে নিতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রের পরামর্শ, স্থানীয় থানার সঙ্গে হাসপাতালগুলির যোগাযোগ রাখতে হবে এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে যৌন নির্যাতন রুখতে একটি অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠন করতে হবে। এ ছাড়া সিকিউরিটি কন্ট্রোল রুমে যাতে সর্ব ক্ষণ কোনও না কোনও কর্মী উপস্থিত থাকেন, সেটিও দেখতে বলা হয়েছে।
আরজি কর-কাণ্ডের পর থেকে দেশের একাধিক প্রান্তে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠে এসেছে। উত্তরাখণ্ড ও মহারাষ্ট্রের দুই হাসপাতালের নার্সকে ধর্ষণের অভিযোগও উঠেছে। একের পর এক ঘটনার আবহে এ বার রাজ্যগুলিকে পরামর্শগুচ্ছ পাঠাল কেন্দ্র। কর্মস্থলে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ন্যূনতম প্রয়োজনগুলি পূরণ করতে সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, তার প্রেক্ষিতেই এই পরামর্শ জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।