মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। —ফাইল ছবি।
স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামে ১৮% জিএসটি প্রত্যাহারের দাবি মানা দূরের কথা। উল্টে এ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিরোধী শিবিরের বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ আনলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
নির্মলার বক্তব্য, এ নিয়ে সংসদে বিক্ষোভ না দেখিয়ে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের সামনে বিক্ষোভ দেখানো উচিত। কারণ, কেন্দ্র ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে তৈরি জিএসটি পরিষদ এই জিএসটি বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। আর জিএসটি বাবদ ১০০ টাকা আয় হলে ৭৩-৭৪ টাকা রাজ্যগুলির মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে আজ লোকসভায় সীতারামনের প্রশ্ন, বিরোধীরা কি নিজের রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের চিঠি লিখেছেন?
প্রথমে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী স্বাস্থ্য বিমায় ১৮% জিএসটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলাকে চিঠি লিখেছিলেন। তারপরে একই দাবিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সীতারামনকে চিঠি লেখেন। তারপর সরব হন বাকি বিরোধীরা।
সংসদে অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছিল, গত তিন বছরে স্বাস্থ্য বিমায় ২৪,৫০০ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। লোকসভায় বিরোধীরা এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। অর্থ বিল পাশের সময় আরএসপি-র এন কে প্রেমচন্দ্রন বিমায় জিএসটি প্রত্যাহারের দাবিতে সংশোধনী এনেছিলেন। কিন্তু তা গ্রাহ্য হয়নি। লোকসভায় নির্মলা বলেন, ‘‘জিএসটি পরিষদে ভোটাভুটিতে রাজ্যগুলির প্রতিনিধিত্ব দুই-তৃতীয়াংশ, কেন্দ্রের এক-তৃতীয়াংশ। কিন্তু বিরোধীদের অবস্থান আশ্চর্যজনক। প্রথমে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর চিঠিকে সরকারের মধ্যে মতভেদ হিসেবে তুলে ধরা হল। তারপরে ‘আমিও বলছি, কমাও’ বলে চিঠি লেখা হল।’’
তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিবাদ করলে নির্মলা বলেন, ‘‘কারও নাম বলিনি। কারও খোঁচা লাগলে অন্য কথা।’’ তিনি বলেন, রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের কাছে বিক্ষোভ করা উচিত। কল্যাণ প্রবল প্রতিবাদ করলে নির্মলা বলেন, ‘‘আমি নরম করে বললে চেঁচিয়ে আমাকে বসিয়ে দেন। কল্যাণদাদার থেকে শিখছি, একটু আগ্রাসী হতে হয়।’’ নির্মলা তাদের নেতৃত্বকে আক্রমণ করবেন বলে জানা থাকলেও সে সময়ে তৃণমূলের বেঞ্চে কল্যাণ ছাড়া বিশেষ কেউ ছিলেন না।
নির্মলা বলেন, ‘‘জিএসটি চালুর আগে থেকে স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামে কর ছিল। তখন কেউ কিছু বলেননি। যাঁরা কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছেন, তাঁরা নিজের রাজ্যের অর্থমন্ত্রীকে চিঠি লেখেননি। এটা কী ধরনের নাটক!’’ তিনি জানান, জিএসটি পরিষদে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে তিন বার আলোচনা হলেও ১৮% হারে জিএসটি-র সিদ্ধান্তই বহাল থেকেছে।