কমল নাথ (বাঁ দিকে) রাহুল গাঁধী ও ইমারতি দেবী। —ফাইল চিত্র
‘আইটেম’ ঘিরে তপ্ত মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক বাতাবরণ। রাজ্যের উপনির্বাচনে বিজেপির মহিলা প্রার্থী ইমারতি দেবীকে ‘আইটেম’ বলে কটাক্ষ করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। তার জেরে পরিস্থিতি এতটাই তেতে উঠেছে যে, শেষ পর্যন্ত ড্যামেজ কন্ট্রোল ময়দানে নামতে হল রাহুল গাঁধীকে। এই ধরনের মন্তব্য ‘দুর্ভাগ্যজনক’ এবং তিনি সমর্থন করেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি। সনিয়া গাঁধীর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে মধ্যপ্রদেশ বিজেপি। অন্য দিকে কমল নাথ সাফাই দিয়েছেন, কাউকে আঘাত করার জন্য এই ধরনের মন্তব্য করেননি তিনি। মঙ্গলবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছন, তিনি ক্ষমা চাইবেন না।
রবিবার গ্বয়ালিয়রের ডবরা এলাকায় প্রচারে গিয়ে ইমারতি দেবীকে ‘আইটেম’ বলে কটাক্ষ করেন কমল। তিনি বলেন, ‘‘বিরোধী প্রার্থীর নাম কেন করব? আপনারা তাঁকে আমার চেয়ে ভাল চেনেন। কি আইটেম!’’ তাঁরই প্রাক্তন সহকর্মীর বিরুদ্ধে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্য ঘিরে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়। সোমবার মুখে কালো কাপড় বেঁধে ওই এলাকায় মিছিল করেন বিজেপি কর্মীরা। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান সনিয়া গাঁধীর হস্তক্ষেপের আর্জি জানান।
কংগ্রেস সভানেত্রী মুখ না খুললেও মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল গাঁধী বলেন, ‘‘কমল নাথ আমার দলের নেতা। কিন্তু উনি যে ধরনের মন্তব্য করেছেন, ব্যক্তিগত ভাবে তা আমি পছন্দ করি না। আমি তাকে সমর্থনও করি না, সে যেই হোন। এটা দুর্ভাগ্যজনক।’’
আরও পড়ুন: ২২ বছর পর সেই ভয়ঙ্কর দৈত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস অর্জন করেছিলাম
এ বছরের মার্চে মধ্যপ্রদেশে কমল নাথের ১৫ মাসের সরকার পড়ে যাওয়ার আগে পর্যন্ত ইমারতি দেবী নারী ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। ওই সময় জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া-সহ এক ঝাঁক বিধায়কের কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের দলে ছিলেন এই ইমারতিও। মধ্যপ্রদেশে ২৪টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন হচ্ছে। ভোটগ্রহণ ৩ নভেম্বর এবং ১০ নভেম্বর ফল ঘোষণা। উপনির্বাচনে দলিত মুখ হিসেবে ইমারতিকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। ভোটে জেতার আগে শিবরাজ সিংহ সরকারেও মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিহার বিধানসভার প্রথম দফার ভোটে কোটিপতি প্রার্থী ১৫৩
এ হেন ইমারতি দেবীর বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য করায় কমল নাথের ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সরব বিজেপি। কিন্তু তিনি ক্ষমা চাওয়ার বদলে বিষয়টিকে লঘু করে দেখাতে চাইছেন। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘কারও সম্মানহানি করতে এই ধরনের মন্তব্য করিনি। আমি ওঁর নাম মনে রাখিনি।’’ সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর হাতে একটি তালিকা ছিল। সেটা দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এই তালিকায় যেমন আইটেময-ওয়ান, আইটেম-টু এ ভাবে রয়েছে, তেমনই বলেছি। এটা কি কাউকে অপমান করা?’’
বিজেপি দলের পাশাপাশি ইমারতি দেবী নিজেও সনিয়া গাঁধীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘সনিয়া গাঁধী নিজেও এক জন মা। ওঁর কাছে আমার আর্জি, এই ধরনের লোককে দলে রাখবেন না। আপনার মেয়েকে নিয়ে যদি কেউ এই ধরনের মন্তব্য করতেন, আপনি কি মেনে নিতে পারতেন? মহিলাদের এই ধরনের মন্তব্য করা হলে মহিলারা এগিয়ে যাবে কি করে?’’ তিনি দলিত বলেই তাঁর বিরুদ্ধে এই ধরনের আক্রমণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন ইমারতি।