ছবি: সংগৃহীত।
এনআরসির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে গত বছরেই। নাগরিকত্ব আইন সংশোধনীও গৃহীত হয়েছে। রাজ্য সরকার নতুন করে ২০০টি ফরেনার্স ট্রাইবুনাল তৈরি করে সেখানে সদস্য-বিচারক ও অন্য পদে নিযুক্তিও সেরে ফেলেছিল ২০১৯ সালেই। কিন্তু বসে বসেই এক বছর বেতন পেলেন তাঁরা। কারণ ফরেনার্স ট্রাইবুনালগুলি আদৌ কবে চালু হবে- তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে অসমে ১০০টি সক্রিয় ফরেনার্স ট্রাইবুনাল আছে। যেহেতু এনআরসি শেষ হওয়ার পরে বহু লক্ষ নাম বাদ পড়ার আশঙ্কা ছিল, তাই আরও ২০০ ট্রাইবুনাল তৈরি করা হয়। পরিকল্পনা ছিল দ্রুত অভিযুক্ত বিদেশি সংক্রান্ত মামলাগুলির নিষ্পত্তি করতে মোট ৫০০ ট্রাইবুনাল গড়া হবে।
গত বছর ৩১ অগস্ট প্রকাশিত চূড়ান্ত এনআরসি থেকে শেষ পর্যন্ত ১৯,০৬,৬৫৭ জনের নাম বাদ পড়ে। বলা হয়েছিল নাম বাদ পড়ার কারণ জানিয়ে স্পিকিং অর্ডার হাতে পাওয়ার ১২০ দিনের মধ্যে ফরেনার্স ট্রাইবুনালে আবেদন করতে হবে। সেই মতো সেপ্টেম্বর থেকে কাজেও যোগ দেন ফরেনার্স ট্রাইবুনালের বিচারকরা। কিন্তু ১২ মাস পরেও সেই অর্ডার পাঠাতে পারেনি এনআরসি দফতর। বরং চলতি বছর জুনে জানানো হয়, এনআরসির সফটওয়্যারে বড় ত্রুটি ধরা পড়েছে। স্পিকিং অর্ডারগুলি তাই রি-ভেরিফিকেশনে পাঠাতে হবে। করোনা ও লকডাউনে সে কাজ কবে শেষ হবে বলতে পারছে না দফতর।
ফলে ২০০টি ফরেনার্স ট্রাইবুনাল তৈরি হয়েও একটা গোটা বছর নিষ্ক্রিয় থাকল। বিচারকপিছু বেতন-ভাতা বাবদ মাসে লাখখানেক টাকাও দিয়ে চলেছে সরকার। এর মধ্যেই নাগরিকত্ব আইন সংশোধনীর জেরে হিন্দুদের ক্ষেত্রে ১৯৭১ নয় কার্যত ২০১৪ সাল ভিত্তিবর্ষ হয়ে গিয়েছে। তা নিয়ে তীব্র আন্দোলন চলেছে রাজ্যে।
পাশাপাশি অসম চুক্তির ছয় নম্বর দফা রূপায়ণ কমিটি সুপারিশ করেছে ভূমিপুত্র অসমিয়া ও জনজাতি চিহ্নিতকরণে ভিত্তিবর্ষ হতে হবে ১৯৫১। রাজ্য সরকারের মুখপাত্র হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানান, ফলে নতুন করে এনআরসি তৈরি করতে হবে। অর্থাৎ শুধু ২০০ ফরেনার্স ট্রাইবুনালই নয়, ১৬০০ কোটি টাকার এনআরসির ভবিষ্যও অনিশ্চিত।
এই পরিস্থিতিতে আগামী মাসে শেষ হতে চলা ২০০ ফরেনার্স ট্রাইবুনাল সদস্যের চুক্তি ফের নবীকরণে আগ্রহী নয় রাজ্য সরকার। কারণ এনআরসি দফতর রিজেকশন স্লিপ না দিতে পারায় এর মধ্যেই বহু কোটি টাকা জলে গিয়েছে।