শিক্ষকের অভাব। তাই বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিলের রাঁধুনিকেই হাতা-খুন্তি ছেড়ে চকখড়ি হাতে তুলে নিতে হয়েছে! স্কুলের প্রধানশিক্ষক থেকে ওই রাঁধুনি, এক বাক্যে এই ঘটনার কথা সকলে স্বীকার করলেও স্রেফ অভিযোগ না পাওয়ার দোহাই দিয়ে এ বিষয়ে নিজের অজ্ঞতার কথা জানিয়ে দিয়েছেন জেলার বিদ্যালয়সমূহের উপ-পরিদর্শক সুশীল শর্মা। তাঁর কথায়, ‘‘এমন অভিযোগ আমাদের কাছে নেই।’’ তবে বিষয়টি খোঁজ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
জেলার বহু প্রাথমিক স্কুলেই এই অবস্থা। স্থানীয় মানুষজনের অভিযোগ, প্রশাসন সব জানে।
তবে ৩০৬ নম্বর দলগ্রাম বিদ্যালয়ের ঘটনা সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে। সেখানকার ছাত্র সংখ্যা ২৮৮। অথচ শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র দুই। দু’জনের পক্ষে এত ছাত্রছাত্রীকে পড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কথায়, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি ৪০ জন ছাত্রের জন্য একজন শিক্ষক থাকার কথা। সেই নিয়মে ৭ জন শিক্ষকের প্রয়োজন। কিন্তু উদাসীন প্রশাসন। শেষ পর্যন্ত শিক্ষকের অভাবে মিড-ডে মিলের এক রাঁধুনিকে দিয়েই প্রথম শ্রেণির ছাত্রদের ক্লাস নেওয়াতে বাধ্য হয়েছেন স্কুলের স্থানীয় কর্তারা। রাঁধুনি বেবিরানি নাথ বলেন, তিনি মূলত রাঁধুনির পদে নিযুক্তি পেয়েছেন। বিদ্যালয়ে ৪ জন রাঁধুনি রয়েছেন। তিনি মাধ্যমিক পাস। তাই তাঁকে ক্লাস নিতে বলা হয়।
পাশাপাশি, দলগ্রাম বিদ্যালয়ের কিছু দূরে ১৩১৫ নম্বর দক্ষিণ টিকরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রের সংখ্যা ২০। সেখানে দু’জন শিক্ষক। এই বৈষম্য চাইলেই দূর করা যায় বলে দাবি স্থানীয় মানুষের। কিন্তু জেলা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সে বিষয়ে তেমন দৃষ্টি নেই।
এর মধ্যে শুরু হয়েছে আর এক নতুন বিপত্তি। জানুয়ারি থেকে শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে অসমের সরকারি স্কুলগুলিতে। ছাত্রছাত্রীরা প্রতিদিনই স্কুলে যাচ্ছে। কিন্তু বইয়ের অভাবে পড়াশোনা লাটে উঠেছে। পাঠ্যবই কবে আসবে, বলতে পারছেন না প্রধান শিক্ষকরাও। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবই সরকার দিয়ে থাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, বই আসেনি তাই মিড-ডে মিল খাইয়েই ছাত্রছাত্রীদের ছুটি দেওয়া হচ্ছে।