ফাইল চিত্র।
করোনা-কবলিত দেশ লকডাউনের আওতায়। ঘরবন্দিদশা দীর্ঘতর হবে কি না, সেই প্রশ্ন সকলেরই। এই পরিস্থিতিতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবর্ষ এবং পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) গড়া কমিটির রিপোর্টে অনলাইনে পঠনপাঠনের উপরেই জোর দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সুপারিশ করা হয়েছে, সময় যে-হেতু কম, তাই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয়/রাজ্য স্তরে অভিন্ন প্রবেশিকার ব্যবস্থা করা হোক।
সাত সদস্যের ওই কমিটি শিক্ষাবর্ষ জুলাইয়ের বদলে সেপ্টেম্বরে শুরু করা অথবা সব সিমেস্টার/বর্ষের পরীক্ষা জুলাইয়ের মধ্যে সেরে ফেলার সুপারিশের পাশাপাশি অনলাইনে পঠনপাঠনের ব্যাপারে কিছু প্রস্তাবও দিয়েছে। বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে যাতে অনলাইনে পঠনপাঠন নির্বিঘ্নে চালানো যায়, সেই জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই পাঠ-প্রযুক্তির তালিম নেওয়া জরুরি। যাতে তাঁরা পাঠ্যক্রমের অন্তত ২৫% অনলাইনে শেষ করতে পারেন। সেই সঙ্গে প্রতিটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উচিত ভার্চুয়াল ক্লাসরুম তৈরি করা। পাশাপাশি ভিডিয়ো-সম্মেলনের ব্যবস্থাও যেন থাকে। কমিটির বক্তব্য, ই-কনটেন্ট ল্যাবরেটরি তৈরি করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে। সুপারিশ করা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারছেন না। তাঁরা মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ভার্চুয়াল ল্যাবরেটরি ব্যবহার করতে পারেন। অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য ইউজিসি পৃথক একটি কমিটি তৈরি করেছিল। সেই কমিটি অবশ্য বিভিন্ন পাঠ্যক্রমের ৪০ শতাংশ অনলাইনে পড়ানোর সুপারিশ করেছে।
লকডাউনের মধ্যে অনলাইন পঠনপাঠনের সুফল সব ছাত্রছাত্রী পাচ্ছেন কি না, সেই প্রশ্ন জোরদার হয়েছে। সম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (কুটা) এই বিষয়ে তাদের সদস্যদের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়েছিল। দেখা গিয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকেই এই লকডাউনের মধ্যে অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছেন। কিন্তু সব পড়ুয়ার কাছে অনলাইনে পঠনপাঠনের সুবিধা নেই। শিক্ষকদেরও অনেকে প্রযুক্তি ব্যবহার করে পঠনপাঠনে তেমন পটু নন।
ইউজিসি-র দ্বিতীয় কমিটির সুপারিশ, সম্ভব হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অনলাইনেই পরীক্ষা নিতে পারে। নইলে করোনা পরিস্থিতির অবসানে খাতায়-কলমে পরীক্ষা নিতে হবে। সেই বিষয়েও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক পড়ুয়ার ল্যাপটপ, স্মার্টফোন নেই। এমনকি বহু ছাত্রছাত্রী ইন্টারনেট সংযোগ থেকেও বঞ্চিত। এ-হেন পরিস্থিতিতে অনলাইনে পরীক্ষা এবং পঠনপাঠনের উদ্যোগ সফল হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন: ধনখড়কে বিঁধে কল্যাণের চিঠি, পাল্টা জবাবও
ওই দুই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছে আগামী সপ্তাহে ‘গাইডলাইন’ বা নির্দেশিকা পাঠানোর কথা ইউজিসি-র। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর ওই দু’টি রিপোর্টকে গুরুত্ব দেবে কি না, সেই বিষয়েও বিতর্ক চলেছে সমানে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)