করিমগঞ্জ পুলিশের তত্পরতায় ধরা পড়ল ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক লিবারেশন আর্মির (উদলা)-র এরিয়া কম্যান্ডার মনোজয় রিয়াং। এই মনোজয়ই করিমগঞ্জের রাতাবাড়ির বিস্তৃর্ণ এলাকা, ভিতরবালিয়া, মেদলিছড়া, রাঙ্গামাটি, নিভিয়া-চেরাগি এলাকার দায়িত্বে ছিল। বিভিন্ন লোকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে অর্থ দাবি করত সে। টাকা না দিলে অপহরণ, এমনকী খুন করতেও পিছপা হত না। জঙ্গিদের সঙ্গে অনেকবারই পুলিশ, সেনাবাহিনীর গুলির লড়াই হয়েছে। সাম্প্রতিক এক সংঘর্ষে সাত জঙ্গির মৃত্যুও হয়। কিন্তু তারপরেও জঙ্গিদের তত্পরতা হ্রাস পায়নি।
চার পাশে জঙ্গি উপদ্রবের মাঝখানে এক সময় বরাক উপত্যকা শান্তির দ্বীপ হিসেবে পরিচিতি ছিল। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী বরাককে শান্তির দ্বীপ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। কিন্তু এই শান্তির দ্বীপ আজ অনেকটাই অশান্ত। নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আলফা, মাওবাদীদের আনাগোনা বেড়েছে বরাকে। সক্রিয় রয়েছে বিভিন্ন দেশবিরোধী চক্র। এ ছাড়া, বরাকের করিমগঞ্জ এবং হাইলাকান্দি জেলায় রয়েছে উদলার ঘাঁটি। মনোজয়ের নেতৃত্বেই চলত তাদের কাজকর্ম।
করিমগঞ্জ জেলার মেদলিছড়ায় জঙ্গিরা আত্মগোপন করে রয়েছে খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নবীন সিংহের নেতৃত্বে পুলিশ এবং আধা-সামরিক বাহিনী গত কাল তল্লাশি অভিযান শুরু করে। প্রথমে জঙ্গিদের অস্তিত্বই খুঁজে পায়নি পুলিশ। হঠাত্ করেই এক যুবককে সন্দেহ হয়। নবীন সিংহ তাকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত জানা যায়, সেই দলনেতা মনোজয়। জেরায় সে জানায়, উদলা এখন দু’টি গোষ্ঠীতে বিভক্ত। একটি গোষ্ঠীর কর্ণধার ধন্যরাম রিয়াং। সংগঠনের নাম নাম ইউডিএলএ (অরিজিন্যাল)। অন্য দিকে, ইউডিএলএ (রাজেশ)-এর মাথায় রয়েছে রাজেশ চর্কি। মনোজয় রাজেশ চর্কি গোষ্ঠীর সদস্য। গত মাসে করিমগঞ্জে সেনাবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে যে দুই জঙ্গির মৃত্যু হয়েছিল তাদের নাম শিশুমণি রিয়াং এবং নরেন্দ্র রিয়াং বলে মনোজয় জানায়। রাজেশ গোষ্ঠী অনেক বেশি সক্রিয় বলেও মনোজয় জানায়।