বালাসাহেবের দলের নাম এবং প্রতীক পেল না শিবসেনার কোনও গোষ্ঠীই। ফাইল চিত্র।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন উদ্ধব ঠাকরে। শনিবার (৪ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের তরফে দলের নাম ‘শিবসেনা’ এবং নির্বাচনী প্রতীক ‘তির-ধনুক’ ব্যবহার সাময়িক ভাবে বন্ধ (ফ্রিজ) করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। উদ্ধব এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন দুই যুযুধান গোষ্ঠীকে বিকল্প নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক জানাতেও নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন। সেই সিদ্ধান্তকেই সোমবার দিল্লি হাই কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে উদ্ধব শিবির।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে অবশ্য ইতিমধ্যেই উদ্ধব গোষ্ঠী তাদের পছন্দের তিনটি নির্বাচনী প্রতীক জমা দিয়েছে। তার মধ্যে ‘উদিত সূর্য’ ও ‘ত্রিশূল’ রয়েছে। এ ছাড়া, উদ্ধব শিবিরের তৃতীয় পছন্দ হিসেবে রয়েছে ‘মশাল’। দলের নামের ক্ষেত্রে উদ্ধব-সেনার প্রথম পছন্দ ‘শিবসেনা বালাসাহেব ঠাকরে’। দ্বিতীয় পছন্দ ‘শিবসেনা উদ্ধব বালাসাহেব’ এবং তৃতীয় তথা শেষ পছন্দের নাম ‘শিবসেনা বালাসাহেব প্রবোধঙ্কর’।
উদ্ধব ঠাকরের পর শিন্ডেও তাঁর নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর জন্য নতুন তিনটি নির্বাচনী প্রতীক চিহ্ন এবং তিনটি নতুন নাম নিয়ে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দু’গোষ্ঠীর প্রথম দু’টি পছন্দ (‘উদিত সূর্য’ এবং ‘ত্রিশূল’) মিলে গিয়েছে। তবে নির্বাচনী প্রতীক হিসাবে শিন্ডে গোষ্ঠীর তৃতীয় তথা শেষ পছন্দ ‘গদা’।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সাল থেকে শিবসেনা তির-ধনুককে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করছে। তার আগে পর্যন্ত বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতীক চিহ্ন ছিল তাদের। কিন্তু শনিবার নির্বাচন কমিশন জানায়, মহারাষ্ট্রে আসন্ন আন্ধেরি পূর্ব বিধানসভা উপনির্বাচনে যুযুধান কোনও গোষ্ঠীই ‘তির-ধনুক’ প্রতীক এবং ‘শিবসেনা’ নামটি ব্যবহার করতে পারবে না।
গত জুনে উদ্ধবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন শিন্ডে-সহ সংখ্যাগরিষ্ঠ শিবসেনা বিধায়ক। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়েন উদ্ধব। এর পর শিন্ডে বিদ্রোহী বিধায়কদের নিয়ে বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে সরকার গঠন করেন। শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া ইস্তক শিবসেনার রাশ কার হাতে থাকবে, এ নিয়ে দুই শিবিরের মধ্যে চলছে লড়াই। কে প্রকৃত শিবসেনা, তা বাছাইয়ের দায়িত্ব যাতে নির্বাচন কমিশনের হাতে না যায়, সে জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল উদ্ধব গোষ্ঠী।
কিন্তু গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। ‘আসল শিবসেনা’ বাছার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অনুমতি দেওয়া হয় কমিশনকে। প্রসঙ্গত, নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং ভাঙনের জেরে অতীতে তামিলনাড়ুতে এডিএমকে এবং বিহারে লোক জনশক্তি পার্টিরও নির্বাচনী প্রতীক ‘ফ্রিজ’ করেছে নির্বাচন কমিশন।