বিধানসভায় কৃষিঋণ মকুবের কথা ঘোষণা করেন উদ্ধব। —ফাইল চিত্র।
ক্ষমতায় আসার এক মাসের মধ্যে মহারাষ্ট্রে কৃষকদের ঋণ মকুব করে দিল উদ্ধব ঠাকরে সরকার। চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কৃষিকাজের জন্য যাঁরা ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিয়েছেন, তাঁদেরই এই ছাড় দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
শনিবার রাজ্য বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিনে ‘মহাত্মা জ্যোতিরাও ফুলে লোন ওয়েভার স্কিম’-এর আওতায় এই ঘোষণা হয়। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে উদ্ধব ঠাকরে বলেন, ‘‘এ বছর ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যাঁরা ঋণ নিয়েছেন, তা মকুব করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ মাফ করে দেওয়া হবে।’’
তবে এর জন্য সরকারি অফিসের সামনে কৃষকদের লাইনের সামনে কৃষকদের লাইন দিতে হবে না, কোনও রকম আবেদনও করতে হবে না বলে জানিয়ে দেন উদ্ধব। তিনি জানান, প্রত্যেক জেলায় মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের ছোট ছোট ইউনিট খোলা হবে। সেখানে ঋণ মকুব সংক্রান্ত যাবতীয় অভাব-অভিযোগ জানাতে পারবেন তাঁরা। এ ছাড়াও, কৃষকরা যাতে সময়ে ঋণ তৈরি শোধ করে দিতে পারেন, তার জন্য রাজ্য সরকার খুব শীঘ্র আরও একটি প্রকল্প তৈরি করবে বলে জানান উদ্ধব।
অক্টোবরে বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই কৃষিঋণ নিয়ে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক তরজা চলে আসছিল। নির্বাচনে ১০৫টি আসনে জয়ী হয়ে একক বৃহত্তম দল হিসাবে উঠে আসে বিজেপি। তবে ২৮৮ সদস্যের বিধানসভায় ম্যাজিক সংখ্যা ছুঁতে পারেনি তারা। তার উপর শরিক দল শিবসেনাও বেঁকে বসে। বাধ্য হয়ে এনসিপি থেকে অজিত পওয়ারকে ভাঙিয়ে এনে রাতারাতি সরকার গড়ে ফেলেন দেবেন্দ্র ফডণবীস।
যদিও শরদ পওয়ারের হস্তক্ষেপে এনসিপি বিধায়করা বেঁকে বসায় ৮০ ঘণ্টা পরেই সেই সরকার ভেঙে দিতে হয় দেবেন্দ্র ফডণবীসকে। তার পরই এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ে শিবসেনা। সেই ‘মহা বিকাশ আঘাডি’ জোটের নেতা নির্বাচিত হন উদ্ধব ঠাকরে। ক্ষমতায় এসেই কৃষিঋণ মকুব করা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে তিন দলের মধ্যে। তার পরই শনিবার রাজ্য বিধানসভায় এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা করেন উদ্ধব।
কিন্তু তাঁর এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় এ দিন বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করে বিজেপি। দেবেন্দ্র ফডণবীস বলেন, ‘‘জনমত আগেই মানেনি, এ বার কৃষকদের সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করল এই সরকার। সমস্ত ঋণ মকুব করার কথা থাকলেও, মাত্র ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মকুব করা হয়েছে।’’