উদ্ধব ঠাকরে (বাঁ দিকে) এবং একনাথ শিন্ডে। —ফাইল চিত্র।
‘আসল’ শিবসেনা নিয়ে মহারাষ্ট্র বিধানসভার স্পিকারের পর্যবেক্ষণ এবং সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন উদ্ধব ঠাকরে। গত বুধবার মহারাষ্ট্র বিধানসভার স্পিকার তথা বিজেপি বিধায়ক রাহুল নারওয়েকর জানান, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীই ‘আসল শিবসেনা’। স্পিকারের পর্যবেক্ষণ ছিল যে, উদ্ধব ঠাকরের কোনও আইনি ক্ষমতাই নেই শিন্ডে-সহ ১৬ বিধায়ককে বহিষ্কারের। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই সোমবার বিকেলে শীর্ষ আদালতে গেলেন বালাসাহেব ঠাকরের পুত্র।
২০২২ সালের জুন মাসে সাবেক শিবসেনা থেকে দলত্যাগ করে শিন্ডে শিবিরে যোগ দেওয়া বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজের জন্য স্পিকারের কাছে আর্জি জানিয়েছিল উদ্ধব শিবির। কিন্তু সেই আর্জিও খারিজ করে দেন স্পিকার। সুপ্রিম কোর্টে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেও আর্জি পেশ করেছেন শিবসেনা (ইউবিটি)-র প্রধান তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব।
শিবসেনার ভাঙনের মধ্যে দিয়ে ২০২২-এর জুনে উদ্ধব সরকারের পতন হয়েছিল। কুর্সিতে বসেছিলেন শিন্ডে। সেই সময়ে দলের অধিকারের দাবি করতে গিয়ে দু’পক্ষই অন্য শিবিরের বিধায়কদের পদ খারিজের আবেদন করে। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধবের তরফে প্রথমে এ বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছিল।
বিজেপির সাহায্য নিয়ে উদ্ধবকে ক্ষমতাচ্যুত করা শিন্ডে এবং তাঁর সঙ্গে প্রথম দফায় ‘বিদ্রোহী’ আরও ১৫ জন শিবসেনা বিধায়কের সেই পদক্ষেপ ‘দলত্যাগ বিরোধী কার্যকলাপ’ ছিল কি না, গত ১১ মে সুপ্রিম কোর্ট তা বিবেচনার ভার দিয়েছিল মহারাষ্ট্র বিধানসভার স্পিকারকে। উদ্ধব শিবিরের অভিযোগ, সেই সিদ্ধান্ত নিতে ‘ইচ্ছাকৃত’ ভাবে দেরি করছেন স্পিকার। এর পরে সুপ্রিম কোর্ট স্পিকার নারওয়েকরকে এ বিষয়ে ১০ জানুয়ারির মধ্যে রায় ঘোষণার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল।
২০২৩ সালের ১১ মে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানায়, শিন্ডে-সহ ১৬ বিধায়কের পদ বহাল থাকবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন স্পিকার। অবশ্য তার আগেই সংখ্যাগরিষ্ঠ শিবসেনা বিধায়ক শিন্ডেশিবিরে যোগ দেন। তাঁদের সমর্থন নিয়ে এনসিপি বিধায়ক জিরওয়ালকে সরিয়ে স্পিকার হন বিজেপির নারওয়েকর। এর পরে নির্বাচন কমিশন ২০২৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শিন্ডেগোষ্ঠীকে ‘আসল শিবসেনা’র মর্যাদা দিয়ে শিবসেনার পতাকা এবং নির্বাচনী প্রতীক (তির-ধনুক) ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল। যদিও দলবদল সংক্রান্ত মূল মামলাটি এখনও শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন।