প্রতীকী ছবি।
অসমের করিমগঞ্জ জেলার দু’টি বন্ধ চা-বাগানের শ্রমিকদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বহু পরিবারে একবেলাও খাবার জুটছে না বলে অভিযোগ। ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়াও প্রায় বন্ধ। অনাহার-অর্ধাহারে রোগের সংক্রমণও বাড়ছে।
৭২ দিন হল আয়লাবাড়ি বাগানে তালা ঝুলছে। বোনাস বিতর্কে ২৫ সেপ্টেম্বর হাতিখিরায় লকআউট ঘোষণা করে মালিকপক্ষ। অভিযোগ, জেলা প্রশাসন বাগান খোলার ব্যাপারে বার কয়েক মিটিং ডাকলেও এখন তাদের দায়সারা মনোভাব। আজ অসম বিধানসভার অধিবেশন শুরুর আগে বিধানসভার প্রবেশপথে ধর্নায় বসেন দুই কংগ্রেস বিধায়ক। উত্তর করিমগঞ্জের কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ ও মরিয়ানির রূপজ্যোতি কুর্মি এ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন। তাঁদের বক্তব্য, বাগান শ্রমিকদের সব সময়েই ‘হপ্তা আনি হপ্তা খাই’ অবস্থা। সঞ্চয়ের সুযোগ মেলে না। এ দিকে, বাগানে লকআউটের পরই রেশনও বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় আয়লাবাড়ি ও হাতিখিরায় বহু শ্রমিকের ঘরে প্রতিদিন রান্না হয় না।
টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার বরাকভ্যালি শাখার সচিব শরদিন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আয়লাবাড়ি বাগানের সমস্যাটা ভিন্ন। সেখানে মালিকপক্ষকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে হাতিখিরা বাগান খোলার ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে।’’ করিমগঞ্জের জেলা উন্নয়ন কমিশনার রঞ্জিতকুমার লস্কর জানান, শনিবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছে। হাতিখিরা শীঘ্র খুলে যাবে বলে তাঁর আশা। আয়লাবাড়ি প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, শ্রম বিভাগ বাগানটি খোলানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। তবে বরাক চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহকারী সম্পাদক দীননাথ বারই বলেন, ‘‘শনিবারের বৈঠকের কথা এখনও প্রশাসনের তরফে তাদের জানানো হয়নি। শ্রম বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, মালিক দেনা ও সম্পত্তির উপর অধিকার ছেড়ে দেওয়ার পর টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন দুই সংস্থাই জানিয়েছে, আয়লাবাড়ি তাদের সদস্য-বাগান নয়। পরে সরকার তা অধিগ্রহণ করে। এখন উপযুক্ত মালিক খোঁজা হচ্ছে। তারা আশাবাদী, দ্রুত সমাধানে পৌঁছনো যাবে।