মধ্যপ্রদেশে নদী-সেতুতে জোড়া ট্রেন দুর্ঘটনা

প্রচণ্ড বৃষ্টিতে বেলাইন হয়ে একই নদীসেতুর উপরে বড় দুর্ঘটনার মুখে পড়ল দু’-দু’টি ট্রেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে প্রথমে মুম্বই থেকে বারাণসীগামী কামায়নী এক্সপ্রেস মধ্যপ্রদেশের হরদা স্টেশন থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে মেচক নামে একটি নদীসেতুর উপরে বেলাইন হয়ে যায়। একেবারে নদীর মধ্যেই পড়ে যায় যাত্রিবাহী ওই ট্রেনের চারটি কামরা। জানা গিয়েছে, ট্রেনটির শেষ চারটি কামরাই জলে পড়েছে। হরদা-র কালেক্টর রজনীশ শ্রীবাস্তব এ খবর জানান।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৫ ০৩:৫৪
Share:

প্রচণ্ড বৃষ্টিতে বেলাইন হয়ে একই নদীসেতুর উপরে বড় দুর্ঘটনার মুখে পড়ল দু’-দু’টি ট্রেন।
মঙ্গলবার গভীর রাতে প্রথমে মুম্বই থেকে বারাণসীগামী কামায়নী এক্সপ্রেস মধ্যপ্রদেশের হরদা স্টেশন থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে মেচক নামে একটি নদীসেতুর উপরে বেলাইন হয়ে যায়। একেবারে নদীর মধ্যেই পড়ে যায় যাত্রিবাহী ওই ট্রেনের চারটি কামরা। জানা গিয়েছে, ট্রেনটির শেষ চারটি কামরাই জলে পড়েছে। হরদা-র কালেক্টর রজনীশ শ্রীবাস্তব এ খবর জানান। তার কিছু পরেই বিহারের পটনা থেকে মুম্বইগামী জনতা এক্সপ্রেস ওই একই সেতুর উপরে বেলাইন হয়ে যায়। নদীর উপরে ঝুলতে থাকে ইঞ্জিন-সহ চারটি কামরা। হোসাঙ্গাবাদের ডিভিশনাল কমিশনার ভি কে বাড় সংবাদমাধ্যমকে এ খবর জানান। ভারী বৃষ্টির মধ্যে সেতু পেরোতে গিয়েই এমন ঘটেছে বলে রেল সূত্রের খবর। প্রবল বর্ষণে সেতুটির অবস্থা খানিকটা বিপজ্জনক হয়েই ছিল। কার্যত জলে ডুবে ছিল সেটি। গভীর রাতের বৃষ্টির মধ্যে তার উপর দিয়ে যেতে গিয়েই দু’টি ট্রেন এত বড় বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ল। প্রায় সাড়ে তিনশো মানুষ এর ফলে হতাহত হয়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক অতীতে একই নদীসেতুর উপরে জোড়া দুর্ঘটনার এমন নজির নেই।
সময়সূচি অনুযায়ী কামায়নী এক্সপ্রেস মহারাষ্ট্রের লোকমান্য তিলক স্টেশন থেকে দুপুর ১২টা৪০ মিনিটে ছেড়ে পরের দিন সন্ধের সাড়ে সাতটা নাগাদ বারাণসী পৌঁছয়। সূচি বলছে, জনতা এক্সপ্রেস পটনা থেকে রাত সাড়ে ১১টায় ছেড়ে পরের পরের দিন সকাল ১০টা৫০ মিনিটে মুম্বই পৌঁছয়। বৃষ্টিতে দু’টি ট্রেনই আস্তে চলছিল। দু’টি ট্রেনই মধ্যরাতে ভোপাল থেকে ১৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে হরদা স্টেশন পেরোয়। তার পরেই এই ঘটনা। ইটারসি থেকে চিকিৎসক এবং উদ্ধারকারী দল একটি বিশেষ ট্রেন নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছচ্ছে। তবে বৃষ্টিতে ওই এলাকার ট্রেনলাইনের একটা বড় অংশ ডুবে রয়েছে। ফলে উদ্ধারকারী দলের পৌঁছতেও কিছুটা সময় লেগেছে বলে জানা গিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির হিসেব এখনও মেলেনি। গভীর রাতেই রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু টুইট করে বলেন, সরকার সমস্ত রকম ভাবে উদ্ধারের চেষ্টা চালাবে। ইতিমধ্যেই সেনাবাহিনীকে সতর্ক করা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের সাহায্য চাওয়া হবে।

Advertisement

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিজয় সোমানি ফোনে একটি টিভি চ্যানেলকে জানান, প্রায় ডুবে যাওয়া সেতুটির উপর দিয়ে খুব আস্তেই ট্রেন নিয়ে যাচ্ছিলেন চালক। কিন্তু কামায়নী এক্সপ্রেসের শেষ চারটি কামরা বেলাইন হয়ে জলে পড়ে যায়। বাকি কামরাগুলিকে পরের স্টেশনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। আর উল্টো দিক থেকে আসা জনতা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন-সহ প্রথম চারটি কামরা নদীর উপরে ঝুলতে থাকে। খানিক পরে ইঞ্জিনটি নদীর মধ্যে পড়ে যায়। ফলে বাকি কামরাগুলিকে কামায়নীর মতো তৎক্ষণাৎ সরানো সম্ভব হয়নি। সোমানি সংবাদমাধ্যমকে জানান, আশপাশের গ্রামগুলিও জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে। তার মধ্যেও গ্রামবাসীরা ছুটে এসে উদ্ধারে হাত লাগিয়েছেন। তাঁরাই প্রাথমিক ভাবে অন্তত ৫০-৬০ জনকে জলের মধ্যে থেকে টেনে তুলেছেন বলেও জানান তিনি। বিপর্যস্তদের মধ্যে ১৫-২০ জন মহিলা ও শিশুও রয়েছেন। তবে সব মিলিয়ে ঠিক কত জন এই দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, জানা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement