সরকার অনিশ্চিতই মহারাষ্ট্রে, হোটেলবন্দি শিবসেনারা

এই শিবসেনাই আজ তাদের নতুন বিধায়কদের হোটেলে নিয়ে গিয়ে তুলেছে। বিজেপি তাঁদের ভাঙিয়ে নিতে পারে, এই আশঙ্কায়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৩০
Share:

উদ্ধব ঠাকরে। —ফাইল চিত্র

অনড় বিজেপি, অনড় শিবসেনা। পুরনো সরকারের মেয়াদ ফুরনোর দু’দিন আগেও মুখ্যমন্ত্রিত্ব ঘিরে পুরোদস্তুর অচলাবস্থা মহারাষ্ট্রে। শিবসেনা সূত্রের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়া অমিত শাহের দলের সঙ্গে আর কোনও বিষয় নিয়ে কথাই বলবেন না উদ্ধব ঠাকরে।

Advertisement

এই শিবসেনাই আজ তাদের নতুন বিধায়কদের হোটেলে নিয়ে গিয়ে তুলেছে। বিজেপি তাঁদের ভাঙিয়ে নিতে পারে, এই আশঙ্কায়। কাজেই দক্ষিণের বিখ্যাত ‘হোটেল-রাজনীতি’ ছায়া ফেলেছে মরাঠা ভূমিতেও। বস্তুত, রাজ্যে এনসিপি-র প্রধান জয়ন্ত পাটিল কারও নাম না-করেই আজ বলেছেন, দলবদলের লোভ দেখানো হচ্ছে কয়েক জন বিধায়ককে। একই অভিযোগ করেছেন রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি বালসাহেব থোরাট। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিজেপি শরিক সামলাতে পারে না, কথাও রাখতে পারে না। দুই শরিকের ক্ষমতার লড়াইয়ে আখেরে ভুগছেন রাজ্যের চাষিরা।’’ এনসিপি প্রধানের অবশ্য দাবি, তাঁর দলের বিধায়কদের লোভ দেখানো হচ্ছে না। এনসিপি বিরোধী আসনে বসতে প্রস্তুত বলেই জানান তিনি।

অন্য দিকে, মরাঠা বিজেপি নেতা নিতিন গডকড়ী জানিয়ে দিয়েছেন, ‘শিষ্য’ দেবেন্দ্র ফডণবীসকেই কুর্সিতে দেখতে চান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর নামও যে শোনা যাচ্ছে, সেই জল্পনাও উড়িয়ে দেন গডকড়ী। মহারাষ্ট্র বিজেপির সভাপতি চন্দ্রকান্ত পাটিল আজ দুই মন্ত্রীকে নিয়ে রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারির সঙ্গে দেখা করেন। পরে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার গঠনের আইনি দিকগুলি নিয়ে কথা হয়েছে রাজ্যপালের সঙ্গে।

Advertisement

শিবসেনার অভিযোগ, রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি। ১৩ দিন হল, ফল বেরিয়েছে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটের। বিজেপির আসন কমতেই আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদ চেয়ে বসেছেন উদ্ধব। আজ সকালে নিজের বাসভবন ‘মাতোশ্রী’-তে দলের নতুন বিধায়কদের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক বৈঠক করেন শিবসেনা প্রধান। সূত্রের বক্তব্য, লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি-শিবসেনার মধ্যে যে পদ ও দায়িত্ব সমান ভাবে ভাগ করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সে বিষয়ে একমত হন বিধায়কেরা। সরকার গড়া নিয়ে উদ্ধবই যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন, সেই মর্মে প্রস্তাবও পাশ হয় বৈঠকে।

এই বৈঠকের পরে ঠাকরেদের বাসভবনের কাছে রঙ্গসারদা হোটেলে সেনা বিধায়কদের পৌঁছে দেওয়া হয়। বিধায়ক সুনীল প্রভু বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সব বিধায়কের একসঙ্গে থাকাটা দরকার। উদ্ধবজির সিদ্ধান্ত মানতে আমরা বাধ্য।’’ শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘‘হুমকি আর ব্ল্যাকমেলিংয়ের কৌশল এখন খাটবে না। আমাদেরও (সরকার গঠনের) বিকল্প রয়েছে।’’ কী সেই বিকল্প, তা অবশ্য ভাঙেননি রাউত।

হাতে যে সময় নেই, বুঝছেন সবাই। কিন্তু দুই শরিকের বিরোধ মেটাতে পারেন, এমন কোনও গ্রহণযোগ্য মুখেরও দেখা মিলছে না। বিজেপি ছেড়ে শিবসেনায় যাওয়া কিশোর তিওয়ারি সম্প্রতি সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত এবং গডকড়ীকে চিঠি লিখে মহারাষ্ট্রে হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এ-ও বলেছিলেন, গডকড়ী মাত্র দু’ঘণ্টায় জট কাটিয়ে দেবেন বলে তিনি আশাবাদী। আজ নাগপুরে গডকড়ী বলেছেন, পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচিত হওয়ার পরে ফডণবীসেরই মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত। তবে সরকার গঠনের কলাকৌশলের সঙ্গে সঙ্ঘপ্রধানকে জড়ানো ঠিক নয় বলেই মনে করেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement