এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে চিনের প্রভাব রুখতে আরও শক্তিশালী ভারতকে দেখতে চায় আমেরিকা। জেমস ম্যাটিসের এই ভারত সফরে তাই সামরিক চুক্তি সংক্রান্ত কথা অনেকটা এগনোর সম্ভাবনা রয়েছে। —প্রতীকী ছবি।
আরও নিবিড় সামরিক সহযোগিতার পথে ভারত এবং আমেরিকা। আফগানিস্তানের উন্নয়ন এবং সে দেশকে জঙ্গিমুক্ত করার লক্ষ্যে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটন। সামরিক সরঞ্জাম আদান-প্রদানের ক্ষেত্রেও দু’দেশের মধ্যে বড়সড় চুক্তির বিষয়ে কথা চলছে। কথা এগিয়ে নিয়ে যেতে ভারত সফরে এ বার মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জেমস ম্যাটিস। সোমবার ভারতে আসছেন তিনি। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই প্রথম ভারত সফরে কোনও শীর্ষ মার্কিন কর্তা।
আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে ওয়াশিংটনের। কাবুলের দখল গণতান্ত্রিক সরকারের হাতেই, কিন্তু আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে তালিবানের প্রভাব এখনও উল্লেখযোগ্য। সন্ত্রাসবাদী হামলা প্রায় রোজকার ঘটনা। এক দিকে আমেরিকা এবং ভারত হাত মিলিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের উন্নয়ন করছে। অন্য দিকে চলছে তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াইও। সেই লড়াই এ বার আরও তীব্র করতে চায় আমেরিকা। আফগানিস্তানের উন্নয়নও তরান্বিত করতে চায় তারা। দুই ক্ষেত্রেই ভারতের সহযোগিতা আরও বেশি করে চাইছে ওয়াশিংটন। জেমস ম্যাটিসের ভারত সফরে সে বিষয়ে আলোচনা হবে বলে খবর।
আরও পড়ুন: নিজের বিপদ ডেকে আনছে আমেরিকা, রাষ্ট্রপুঞ্জে হুঙ্কার উত্তর কোরিয়ার
মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিবের এই ভারত সফরে সামরিক চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনাও অনেকটা এগোবে বলে জানা যাচ্ছে। চিন এবং পাকিস্তানের মোকাবিলা একসঙ্গে করতে হলে ভারতকে যুদ্ধবিমানের সংখ্যা বেশ কিছুটা বাড়াতে হবে। অত্যন্ত দ্রুত সেই লক্ষ্য পূরণের দিকে এগোতে চাইছে ভারত। আমেরিকাও সেই লক্ষ্য পূরণে ভারতকে সাহায্য করতে প্রস্তুত। ইতিমধ্যেই আমেরিকা ভারতকে নিজেদের ‘মেজর ডিফেন্স পার্টনার’ বা গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সহযোগী দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে। সন্ত্রাস প্রশ্নে ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানকে তীব্র আক্রমণ করেছে আমেরিকা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই পাকিস্তানকে কঠোর শব্দে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। চিন-ভারত টানাপড়েনেও যে আমেরিকা ভারতেরই পাশে, সে ইঙ্গিতও খুব স্পষ্ট করেই দেওয়া হয়েছে। এ বার ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের আধুকিতম সংস্করণটি দিতে চাইছে আমেরিকা। সে বিষয়েও আলোচনা এগোবে ম্যাটিসের এই ভারত সফরে।
আরও পড়ুন: ওরা আর বেশি দিন নেই, ট্রাম্পের পাল্টা উত্তর কোরিয়াকে
ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তথা গোটা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে চিন নিজেদের প্রভাব বাড়াতে চাইছে। এই অঞ্চলের দেশগুলির মধ্যে চিনকে চ্যালেঞ্জ ছোড়ার সক্ষমতা ভারত ছাড়া আর কারও নেই। চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব রোখা ভারতের নিজের স্বার্থে জরুরিও। ঠিক যেমন ভাবে চিনকে রোখা আমেরিকার জন্যও জরুরি। সে কথা মাথায় রেখেই ভারতকে যুদ্ধবিমান এবং অত্যাধুনিক ড্রোন দিতে প্রস্তুত আমেরিকা। ম্যাটিসের এই সফরে এফ-১৭ ব্লক ৭০ যুদ্ধবিমান এবং প্রিডেটর ড্রোন কেনার বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা হবে।