ফরমালিন মাখানো মাছের বাংলাদেশি চালান অলিখিত ভাবে বন্ধ করে দিল ত্রিপুরা সরকার ও আগরতলার স্থল কাস্টমস। সম্প্রতি আগরতলার মাছের বাজারগুলিতে বাইরে থেকে আসা, বিশেষ করে তেলেঙ্গানা, অন্ধ্র প্রদেশ ও বাংলাদেশের চালানি মাছের মধ্যে ফরমালিনের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়। মৎস্য ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, চালানি মাছ দু-তিন সপ্তাহ ঠিকঠাক রাখার জন্য নিরাপদ মাত্রায় ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। তাতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় না বলেই তাঁদের দাবি। কিন্তু রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর বিষয়টি জানার পরেই ফরমালিন-যুক্ত মাছ বন্ধের ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে।
সম্প্রতি রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী বিধানসভায় এই মর্মে একটি বিবৃতিও দেন। পাশাপাশি, বাজার থেকে সংগ্রহ করা নমুনা রাজ্যের আঞ্চলিক খাদ্য পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করানোর রিপোর্টও বিধানসভায় পেশ করেন। পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদেরও এ সম্পর্কে বিশদে জানান। উল্লেখ্য, রাজ্যের বিশেষজ্ঞদের অভিমত ফরমালিন মানুষের দেহে একদিকে যেমন ক্যান্সারের কারণ হতে পারে, তেমনই কিডনিরও ক্ষতি করতে পারে।
সরকারি এই রিপোর্ট ও বিধানসভায় মন্ত্রীর বক্তব্যে উদ্বিগ্ন কাস্টমস কর্তারা জানিয়ে দিয়েছেন, আগরতলা-আখাউড়া সীমান্তের স্থল বন্দর দিয়ে আর বাংলাদেশি মাছ ঢুকতে দেওয়া হবে না। কাস্টমসের এক কর্তা জানান, ভারতে শুধু মাত্র পশ্চিমবঙ্গের বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থল বন্দর দিয়েই দু’দেশের মাছ আমদানি-রফতানির অনুমোদন আছে| ত্রিপুরার কোন স্থলবন্দর দিয়েই মাছ আমদানি করার অনুমতি নেই। এতদিন শুধু মাত্র ত্রিপুরার মানুষের কথা ভেবেই এই মাছ আমদানি করতে দেওয়া হত। তিনি বলেন, ‘‘সে কারণেই আমরা মৌখিক ভাবে মাছ আমদানি বন্ধ করে দিয়েছি|’’
বাংলাদেশের আখাউড়া স্থল বন্দরের মৎস্য রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহম্মদ ইধন মিয়াঁর বক্তব্য, ‘‘আমাদের এই মাছ স্থানীয় জলাশয় থেকে আগের দিন বিকেলে ধরা হয়। রাতে প্যাকেট করে সকালে মাছগুলি আগরতলায় পাঠানো হয়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কোনও ওষুধ দেওয়া দরকার হয় না।’’ তবে ফরমালিনের খবরে মানুষ এখন স্থানীয় তাজা মাছের দিকেই ঝুঁকেছে। অন্য দিকে, এত মানুষের চাহিদা মেটাবার মতো জোগান নেই। ফলে আগরতলার বাজারে হুহু করে বাড়ছে মাছের দাম।