ব্রডগেজ মানচিত্রে জুড়ল ত্রিপুরা

দেশের মূল ভূখণ্ডের ব্রডগেজ রেল মানচিত্রের সঙ্গে অবশেষে জুড়ল ত্রিপুরা। আগরতলা-দিল্লি ব্রডগেজ ট্রেনের সূচনালগ্নের সাক্ষী থাকতে কয়েক হাজার মানুষ আজ ভিড় জমালেন আগরতলা স্টেশনে।

Advertisement

আশিস বসু

আগরতলা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৬ ০৩:১৮
Share:

ত্রিপুরা সুন্দরী এক্সপ্রেসের উদ্বোধনে (বাঁ দিক থেকে) মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, রাজ্যপাল তথাগত রায়, রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু এবং বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী মুজিবল হক। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী

দেশের মূল ভূখণ্ডের ব্রডগেজ রেল মানচিত্রের সঙ্গে অবশেষে জুড়ল ত্রিপুরা।

Advertisement

আগরতলা-দিল্লি ব্রডগেজ ট্রেনের সূচনালগ্নের সাক্ষী থাকতে কয়েক হাজার মানুষ আজ ভিড় জমালেন আগরতলা স্টেশনে।

১৯৫২ সাল থেকে ত্রিপুরায় ব্রডগেজ রেলের প্রতীক্ষায় ছিলেন রাজ্যবাসী। মিটারগেজ শুরু হয়েছিল ২০০৮ সালে। কিন্তু ট্রেনে চেপে সরাসরি দেশের অন্য কোনও প্রান্তে যাওয়ার সুযোগ ছিল না ত্রিপুরাবাসীর। শিলচর বা গুয়াহাটি পৌঁছে অন্য ট্রেন ধরে যেতে হতো দেশের অন্য প্রান্তে। এ দিন ব্রডগেজ ট্রেন পরিষেবা চালু হওয়ার পর সরাসরি রাজধানী দিল্লিতে পৌঁছতে পারবেন রাজ্যবাসী। আবেগতাড়িত ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তাই বললেন, ‘‘রাজ্যবাসীর ৬ দশকের ধারাবাহিক সংগ্রামের ফল আজ মিলল।’’ পূর্বতন কংগ্রেস সরকারকে সমালোচনা করে মানিকবাবু বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় ব্রডগেজ রেল আনার ক্ষেত্রে কংগ্রেস সরকারের সদর্থক ভূমিকা আমরা দেখতে পায়নি।’’ পাশাপাশি বর্তমান রেল মন্ত্রকের প্রশংসা করেন তিনি। তিনি দাবি করেন, দক্ষিণ ত্রিপুরা থেকে সাব্রুম পর্যন্ত ব্রডগেজ রেল পরিষেবা চালু করাও জরুরি।

Advertisement

এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু, রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোঁহাই, ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়, রাজ্য মন্ত্রিসভার কয়েক জন সদস্য, বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক।

রেলমন্ত্রী কয়েক মাসের মধ্যেই আগরতলা থেকে কলকাতা পর্যন্ত ‘দুরন্ত এক্সপ্রেস’ চালু করারও আশ্বাস দেন রেলমন্ত্রী। তিনি জানান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতিটি রাজ্যের রাজধানীকে ব্রডগেজ রেল মানচিত্রে যুক্ত করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার।

প্রস্তাবিত আগরতলা-আখাউড়া রেল প্রকল্পের শিলান্যাসও এ দিন করা হয়। আগরতলা-আখাউড়া রেল প্রকল্প চালু হওয়ার পর ভারত-বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বন্ধন আরও সুদৃঢ হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন রাজ্যপাল তথাগত রায়।

রেল সূত্রে খবর, আপাতত সপ্তাহে এক দিন আগরতলা-দিল্লি ‘ত্রিপুরাসুন্দরী এক্সপ্রেস’ চলবে। আগরতলা থেকে ট্রেনটি ছাড়বে প্রতি বৃহষ্পতিবার দুপুর ২টোয়। শনিবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে দিল্লির আনন্দবিহারে পৌছবে। অন্য দিকে, প্রতি সোমবার রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে আনন্দবিহার স্টেশন থেকে ছেড়ে বুধবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে সেটি আগরতলা পৌছবে। ট্রেনটি আমবাসা, ধর্মনগর, করিমগঞ্জ, বদরপুর, নিউ হাফলং, হোজাই, লামডিং জংশন, জাগিরোড, গুয়াহাটি, নিউ বঙাইগাঁও, বারাউনি, পাটলিপুত্র, মোগলসরাই, এলাহাবাদ জংশন এবং কানপুর স্টেশনে থামবে।

নরেন্দ্র মোদী সরকার ত্রিপুরায় রেল পরিষেবা চালু করলেও, তা নিয়ে মানিকবাবু এ দিন কোনও মন্তব্য না করায় ক্ষুব্ধ প্রদেশ বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। বিজেপির রাজ্য প্রভারী সুনীল দেওধর বলেন, ‘‘মানিক সরকার রেলের অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করেছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement